বিএনপি নেতিবাচক রাজনীতি ছেড়ে সরকারের সাথে কাজ করবে বলে আশা করছেন তথ্যমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতার কারণে বিএনপি নেতিবাচক রাজনীতি ছেড়ে সরকারের সাথে কাজ করবে বলে আশা করছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করবো, প্রধানমন্ত্রীর এই উদারতা ও মহানুভবতার কারণে বিএনপি নেতিবাচক এবং ধ্বংসাত্মক রাজনীতি থেকে ফিরে আসবে এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের সাথে, আওয়ামী লীগের সাথে একযোগে জনগণের পাশে দাঁড়াবে।’ তথ্যমন্ত্রী আজ দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সচিবালয় বিটের সাংবাদিক প্রতিনিধিদের কাছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সামগ্রী হিসেবে মাস্ক ও হ্যান্ডস্যানিটাইজার হস্তান্তর কালে একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে সাক্ষাত করে আবেদন জানানো হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার উপ-ধারা ১ অনুসারে তার ক্ষমতাবলে বেগম জিয়ার সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে তাকে মুক্তি দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।’

ড.হাছান বলেন, ‘আমি আশা করবো, সরকারের যে মহানুভবতা, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে মহানুভবতায় বেগম জিয়ার সাজা স্থগিত করে তার বয়স বিবেচনা এবং পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে, এর ফলে দেশে তারা যে নেতিবাচক রাজনীতি এবং সবকিছুতে না বলার যে সংস্কৃতি লালন করে আসছিলেন এবং ‘পলিটিকস অফ ডিনায়াল’ এবং ‘পলিটিকস অফ কনফ্রনটেশন’র যে রাজনীতি তারা করে আসছিলেন, সেটির অবসান ঘটাবেন।’ ‘বৈশ্বিক দুর্যোগ এই করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে তাদের (বিএনপি) পক্ষ থেকে অনেক ধরণের নেতিবাচক এমনকি বিদ্বেষভাবাপন্ন কথাবার্তাও বলা হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করবো যে, বেগম জিয়ার মুক্তির প্রেক্ষিতে এখন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় তারা সরকারের সাথে, আওয়ামী লীগের সাথে, একযোগে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কাজ করবেন।’ এ সময় সাংবাদিকরা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্য ‘খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়েছেন, এখন করোনা থেকে দেশ মুক্তি পাবে’ এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেটি বলেছেন কি-না আমি জানি না। যদিও আমি দেখেছি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, অনলাইন মিডিয়াতে, বিভিন্ন নিউজ পোর্টালে মির্জা ফখরুল সাহেবের বরাত দিয়ে এ ধরণের একটি বক্তব্য ছাপানো হয়েছে।’ ‘প্রকৃত পক্ষে করোনাভাইরাস একটি বৈশ্বিক দুর্যোগ। এটির সাথে খালেদা জিয়ার মুক্তির কোনো সম্পর্ক নেই’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন,‘ মির্জা ফখরুল যদি এটি বলে থাকেন, তাহলে আমি আশা করবো, এ ধরণের দায়িত্বহীন কথা আর কেউ বলবেন না।’

‘বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য বিএনপি’র পক্ষ থেকে মির্জা ফখরুল সরকারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন কি-না’-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল তাৎক্ষণিকভাবে সাধুবাদ না জানালেও বিএনপি’র পক্ষ থেকে কিন্তু পরবর্তীতে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের পক্ষ থেকেও ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকেও ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।’ কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছেন উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকারি ছুটি দেয়া হয়েছে এবং যানবাহন চলাচল সীমিত করা হয়েছে, গণপরিবহণ বন্ধ করা হয়েছে। এতে মানুষের চলাচল বন্ধ হলে করোনাভাইরাস সংক্রমণটা রোধ হয়। অন্যান্য দেশ বিশেষ করে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া তাদের অবস্থা নিয়ে তারা অনেকটা সফল হয়েছে। সেই কারণেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। আমরা আশা করি, আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই মহাদুর্যোগ থেকে আমাদের দেশকে, বাংলাদেশের মানুষকে রক্ষা করতে পারবো।’ ‘আগামী দশ দিনের সাধারণ ছুটিতে সাংবাদিকতার কাজে আলাদা কোন কার্ড বা পরিচয়পত্র প্রয়োজন হবে কি না’-সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সাংবাদিকদের যে কার্ড আছে, সেটিই যথেষ্ট। যদি সাংবাদিকদের মিডিয়া হাউজ থেকে বলে দেয়া হয় তিনি অন-ডিউটি, তাহলে সেটিই যথেষ্ট। এটির জন্য আলাদা কার্ডের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ, একজন সাংবাদিক যখন অন-ডিউটিতে থাকেন তখন তাকে সহায়তা করা প্রয়োজন বলে আমি মনেকরি।’ তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/ আখনূর রহমান