বিচারের ভার আপনাদের উপর: সংলাপে হাসিনা

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বহুল আলোচিত সংলাপের শুরুতেই আওয়ামী লীগের ১০ বছরের শাসনকালের মূল্যায়ন করে দেখতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে, সংসদ ভেঙে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি তোলা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসতে অনেকটা আকস্মিকভাবেই রাজি হন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।

বৃহস্পতিবার কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সংলাপে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাড়ি গণভবনে উপস্থিত হন।

ব্যাংকোয়েট হলে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হয়ে সবাইকে সালাম দিয়ে আসন গ্রহণ করেন। তিনি এই সংলাপে ক্ষমতাসীনদের ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, “গণভবন জনগণের ভবন, এখানে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি, আজকে অনুষ্ঠানে যে আপনারা এসেছেন।

“আমি এটুকু বলতে পারি যে বাংলাদেশের জন্য আজকে আমরা যে আর্থ সামাজিক উন্নয়ন করে যাচ্ছি এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখেছি, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের এ উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে বলে মনে করি। এছাড়া এই দেশটা আমাদের সকলের। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।”

শেখ হাসিনা ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের উদ্দেশে বলেন, “আমি এটার বিচার আপনাদের উপরই ছেড়ে দেব। (আমাদের ক্ষমতা গ্রহণের পর) নয় বছর ১০ মাস হতে চলল আমরা সরকারে, এই সময়ের মধ্যে দেশের কতটুকু উন্নয়ন করতে পেরেছি, সেটা নিশ্চয় আপনারা বিবেচনা করে দেখবেন। তবে এটুকু বলতে পারি, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভালো আছে, তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে।

“দিন বদলের যে সূচনা আমরা করেছিলাম, দিন বদল হচ্ছে এটাকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”

তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করা, লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীনতা। আমাদের মহান নেতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আজকে সে স্বাধীনতার সুফল যেনো প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারি সেটাই একমাত্র লক্ষ্য, আর সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।”

প্রধানমন্ত্রী এসময় মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ ও সম্ভ্রম হারানো ২ লাখ মা-বোনে এবং দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামে আত্মত্যাগকারীদের কথা স্মরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর সূচনা বক্তব্যের পর রুদ্ধদ্বার সংলাপ শুরু হয়।

এই সংলাপে কামাল হোসেন ঐক্যফ্রন্টের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।

প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমীন, সাবেক দুই সংসদ সদস্য এস এম আকরাম ও সুলতান মো. মনসুর আহমেদ, জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, তানিয়া রব, আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, আ ও ম শফিকউল্লাহ, মোকাব্বির খান, জগলুল হায়দার আফ্রিক এবং নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না।