বিশ্বের সবচেয়ে অবহেলিত রোহিঙ্গা শিশুরা

মিয়ানমারের জাতিগত নিধনযজ্ঞে পিতা-মাতা হারানো প্রায় অর্ধ লক্ষ এতিম শিশু কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্পে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে মগ ও সেনা বাহিনীর ধর্ষণের স্বাক্ষী হয়ে ভূমিষ্ট হওয়া পিতৃপরিচয়হীন শিশুরা খুবই অবহেলার শিকার।

এরকম শিশুর সঠিক সংখ্যা কতো তা জানা না গেলেও; নজরদারী সংস্থাগুলোর হিসেবে এই সংখ্যা একেবারে কম নয়। অবহেলার শিকার হচ্ছেন ওইসব ধর্ষণের শিকার মায়েরাও। কোন কোন মা সামাজিক অপমান সহ্য করে সন্তানকে সাথে রাখলেও, অনেক শিশু পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সেইভ দ্যা চিলড্রেনের টিম লিডার ডেভিড স্কিনার জানিয়েছেন, মানবিক সংকটে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়ে শিশুরা। মিয়ানমারের নিধনযজ্ঞে শিশুরা একেবারেই আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার মধ্যে ৫৫ শতাংশই শিশু। এদের মধ্যে বাংলাদেশ সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রায় অর্ধ লক্ষ এতিম শিশুর তালিকা তৈরি করেছে। এসব শিশুর কেউ কেউ নিকটাত্মীয় কিংবা পরিচিতদের সাথে বসবাস করছে। প্রায় ৯ হাজার শিশুর লালনপালনকারীকে ইউনিসেফের সহযোগিতায় প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা করে প্রদান করছে সরকার।

অনেক শিশু রয়েছে, যারা ভূমিষ্ট হওয়ার পরপরই কোন না কোনভাবে মাকে হারিয়েছে। এসব শিশু, মায়ের বুকের দুধ পান করার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। সেইভ দ্যা চিলড্রেনের সহায়তায় ক্যাম্পে প্রায় অর্ধশত শিশু ভিন্ন কোন মায়ের বুকের দুধ পান করে বেড়ে উঠছে।

রোহিঙ্গাদের মাঝে অন্যের শিশুকে বুকের দুধ পান করানোর ব্যাপারে অনেক কুসংস্কার এবং বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে। এতে শিশুদের জন্য বুকের দুধ পান করাতে বিকল্প কোন নারীর ব্যবস্থা করা মানবিক সেবা কর্মীদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
মানবিক সংকটে মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কিন্তু কোন নবজাতক মায়ের বুকের দুধ থেকে বঞ্চিত হওয়া- খুবই বেদনাদায়ক।সূত্র্র:ভিওএ

আজকের বাজার/লুৎফর রহমান