বুক বিল্ডিংয়ে সংশোধন আনতে বিএসইসির কাছে বিএমবিএ’র প্রস্তাব

বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও আবেদন অনুমোদনের সময় নানা অনিয়ম ও দীর্ঘসূত্রিতা অবসানে  বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে অনুরোধ জানিয়েছে মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য পাওয়া যায়।

গেল ১৮ ফেব্রুয়ারী, সোমবার বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ অনুরোধ জানায় বিএমবিএ। এসময় বিএমবিএর পক্ষ থেকে বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হয়। বুক বিল্ডিংয়ে দর নির্ধারনে ৫টি পদ্ধতির বিষয়ে কমিশনকে প্রস্তাবনা দেয়া হয়।এরমধ্যে রয়েছে:

১. টাইমিং অব আইপিও রোড শো, ২. রিফ্রেশমেন্টস, গিফটস ইন দ্য আইপিও রোড শো অ্যান্ড লটারি, ৩. অ্যালাওয়িং রিলেটেড পারটিজ টু সাবস্ক্রাইব ইন এন আইপিও ৪. অফার পিরিয়ড ফর আনসাকসেসফুল এলিজিবল ইনভেষ্টর ও ৫. ইন্ট্রডিউসিং হার্ড ফ্লোর মেথড।

তবে এসময় কমিশন ডাচ নিলাম পদ্ধতিটির বিষয়ে তুলে ধরে। এই পদ্ধতিতে কাট-অফ প্রাইসের উপরে দর প্রস্তাবকারীদেরকে প্রস্তাবিত দরেই শেয়ার কিনতে হবে। আর কাট-অফ প্রাইসের নিচে দর প্রস্তাবকারীরা শেয়ার পাবেন না।

প্রস্তাবিত দরেই শেয়ার কিনতে হয় বলে সঠিক দর নির্ধারনে ডাচ নিলাম পদ্ধতিটি কার্যক । এতে নিলামে অংশগ্রহনকারীদের দর প্রস্তাব করার আগে ভালোভাবে চিন্তা করতে হয়। তাই পদ্ধতিটি কমিশনও বেশি উপযুক্ত মনে করেছেন এবং দ্রুত চালু করার বিষয়ে আগ্রহী বলেও জানা গেছে।

আইপিও প্রক্রিয়া সহজ ও কম সময়ে করার জন্য বিএসইসি, ডিএসই, সিএসই ও বিএমবিএ’র প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি যৌথ কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। ওই কমিটি আইপিও সহজতর করার বিষয়ে করণীয় দিকগুলো তুলে ধরবে।

এর আগে, গত ১২ ফেব্রুয়ারির এক সেমিনারে বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন জানিয়েছিলেন, কাট-অফ প্রাইসের উপরে প্রস্তাবিত দরে প্রস্তাবকারীদের শেয়ার ক্রয়ের বিষয়টি বুক বিল্ডিংয়ে যুক্ত হবে বলে । আরও জানান, যোগ্য বিনিয়োগকারীরা নিলামে যে দর প্রস্তাব করবেন, সেই দরে শেয়ার কিনতে হবে এমন আইন স্মল ক্যাপিটাল মার্কেটে চালু করা হয়েছে পরীক্ষামূলকভাবে । যেটা পরবর্তীতে মূল মার্কেটে চালু করা হবে।

২০১৬ সালে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি চালু করা হয়। এরমধ্যেই পদ্ধতিটির অপব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে শেয়ারের কাট-অফ প্রাইস নির্ধারনে কোম্পানিগুলো ও যোগ্য বিনিয়োগকারীরা অনিয়ম ও কারসাজিতে জড়িয়ে পড়েছে। শেয়ারবাজারে আসতে চাওয়া কোম্পানিগুলোর যোগ্যতার তুলনায় শেয়ার দর বেশি করার জন্য এই কারসাজি করা হচ্ছে। আর এতে সফল হচ্ছেন তারা। এজন্য বুক বিল্ডিং পদ্ধতি চালুর ৩ বছরের মধ্যে আবারও পদ্ধতিটি ঝুকির মুখে পড়েছে।

এছাড়া, ঐদিন  বৈঠকে আইপিও প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা, নানারকম অনিয়ম ও সমস্যার বিষয়গুলোও উঠে আসে। পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহী কোম্পানিগুলোর আবেদন প্রক্রিয়াকরণে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর ফোরাম বিএমবিএ। ফোরামটির নেতারা এসময় জানান,আইপিওর বিষয়ে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো স্টক এক্সচেঞ্জের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পায়। আইপিওর আবেদনের ব্যাপারে বিএসইসিতে তাদের মতামত পাঠাতে অনেক বিলম্বও করে । অনেক সময় আবেদন ভালো করে দেখেও হয় না। এছাড়া অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় তথ্য ও নথি চেয়ে ডিএসইসির কাছ থেকে হয়রানি হতে হয় বলেও অভিযোগ তাদের। কমিশনকে এসব বিষয় খতিয়ে দেখতে অনুরোধ জানানো হয়।

উল্লেখ্য, এর আগে নানা অভিযোগের মুখে নিয়ন্ত্রক সংস্থা পদ্ধতিটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়। এসময় ২০১১ সালে এমজেএল বাংলাদেশের পরে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে কোন কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসেনি।

 

আজকের বাজার /মিথিলা