বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত ৭০, আহত ৩০০০

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ এক বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত ও ৩০০০ মানুষ আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবার শহরের বন্দর এলাকার ওই বিস্ফোরণে পুরো বৈরুত শহর কেঁপে ওঠে, যাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে রাজধানীর অনেক ভবন।

এ বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা পরেও অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে দেখা যায় আহতদের বহন করতে। আগুন নেভাতে ব্যবহার করা হয়ে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্ফোরণের কারণে জানা যায়নি।

এদিকে করোনাভাইরাস মহামারি এবং অর্থনৈতিক সংকট উভয়ের সাথে লড়াই করা লেবানন আকস্মিক এ ধ্বংসযজ্ঞের কারণে নতুন করে সংকটের মুখে পড়েছে।

বিস্ফোরণে হতাহত মানুষজনকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে বৈরুতের বেশিরভাগ হাসপাতাল। হতাহতদের ভিড়ে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে হাসপাতালগুলোর করিডোরও। আহতদের চিকিৎসার জন্য দেখা দিয়েছে রক্ত শূন্যতা।

লেবাননের জেনারেল সিকিউরিটির প্রধান আব্বাস ইব্রাহিম জানান, এটি সম্ভবত একটি অতি বিস্ফোরক পদার্থের কারণে ঘটেছে যা সম্প্রতি একটি জাহাজ থেকে বাজেয়াপ্ত করার পর বন্দরে সংরক্ষণ করা হয়েছিল।

স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল এলবিসি জানিয়েছে, ওই উপাদানগুলো ছিল সোডিয়াম নাইট্রেট।

গৃহযুদ্ধ, আত্মঘাতী বোমা হামলা এবং ইসরায়েলের বোমা হামলা দেখে থাকা বৈরুতের জন্য এ বিস্ফোরণ অত্যাশ্চর্য ছিল।

ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে কিছু দিন ধরে উত্তেজনা চললেও এ বিস্ফোরণের সাথে কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা থাকার কথা নাকচ করেছে তেল আবিব।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসরায়েলের এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, এই বিস্ফোরণে ‘ইসরায়েলের কিছু করার নেই।’

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের কর্মীরা জানান, ঘটনাস্থলে আহত অনেক মানুষকে লুটিয়ে পড়তে দেখা গেছে।

সিভিল ডিফেন্সের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বন্দরের অভ্যন্তরে এখনও অনেক মানুষের লাশ রয়েছে। ধ্বংসস্তুপের নিচেও লাশ রয়েছে।

বৈরুতের গভর্নর মারওয়ান আবদৌদ ঘটনাস্থলে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং বলেন, ‘বৈরুত একটি বিধ্বস্ত শহর।’

ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে, বৈরুতের বন্দর এলাকা থেকে বড়ু গম্বুজ আকারে ধোঁয়া উড়ার কিছুক্ষণের মধ্যে বিকট বিস্ফোরণে গাড়ি ও আবাসকি ভবন উড়ে যেতে দেখা যায়।

বিস্ফোরণে হতাহতের এ ঘটনায় বুধবার লেবাননে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব।