ব্যাংক কর্মকর্তারাই জাহালমকে শনাক্ত করেছে: দুদক আইনজীবী

দুর্নীতির মামলায় বিনা অপরাধে কারাভোগ করা পাটকল শ্রমিক জাহালমের ঘটনার দায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্যাংক কর্তৃপক্ষের ওপর চাপাতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ব্যাংকের কর্মকর্তারাই তাকে (জাহালমকে) শনাক্ত করেছে। আমরা ঘটনার বর্ণনা হলফনামা আকারে দাখিল (অ্যাফিডেভিট ইন ফ্যাক্টসে) করছি। আশা করি আগামীকাল (বুধবার) হলফনামা (এফিডেভিট) দাখিল করা হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রথম অভিযোগপত্র দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংকের মতো একটি সরকারি ব্যাংক যখন আমাকে কিছু তথ্য-উপাত্ত পাঠাবে অবশ্যই সেটা আমাকে আমলে নিতে হবে। সেটার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠানো দুদকের কোনো আইনগত এখতিয়ার নাই। ব্যাংকের মাধ্যমেই তথ্য-উপাত্ত পেয়ে আমরা প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করেছি।’

সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা করে দুদক। কিন্তু দুদকের ভুলে সালেকের বদলে তিন বছর ধরে কারাগারে কাটাতে হয়েছে টাঙ্গাইলের জাহালমকে। এ নিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনটি বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত। পরে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন।

জাহালমের আটকাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। পরে তিন বছর ধরে কারাগারে থাকা নিরপরাধ পাটকল শ্রমিক জাহালমকে সোনালী ব্যাংকের অর্থ জালিয়াতির মামলা থেকে অব্যহতি দিয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ওই দিনই মুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এই ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন হলফনামা আকারে দুদককে দাখিলের নির্দেশ দিয়ে ৬ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।

জাহালমের ঘটনায় দুদক দায়মুক্তির পথ খুঁজছে কিনা প্রশ্নের জবাবে দুদক আইনজীবী বলেন, ‘আদালত যে আদেশ দিয়েছে সে আদেশটা আমরা পালন করছি। ব্যাংকের প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই এফআইআর, অনুসন্ধান, চার্জশিট হয়েছে। যেহেতু ব্যাংক আমাকে তথ্যপ্রমাণ দিয়েছে এবং ব্যাংকের দেয়া তথ্যপ্রমাণের ওপর ভিত্তি করে আমি সব করেছি, এখন আদালত নির্ণয় করবে আমার দায় আছে কিনা এবং থাকলে কতটুকু।’

খবর-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ