ব্রিসবেন টেস্টের প্রথম দিন লাবুশেনের

ভারতের বিপক্ষে ব্রিসবেন টেস্টের প্রথম দিনই সেঞ্চুরি করলেন অস্ট্রেলিয়ার ডান-হাতি ব্যাটসম্যান মার্নাস লাবুশেন। তার ১০৮ রানের সুবাদে সিরিজের চতুর্থ টেস্টের প্রথম দিন শেষে ৫ উইকেটে ২৭৪ রান করেছে অস্ট্রেলিয়া।
প্রথম তিন টেস্টের আগের দিনই একাদশ ঘোষনা করেছিলো ভারত। তবে এই টেস্টে সেটি করতে পারেনি তারা। কারন একাদশ সাজাতেই বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলো ভারত। ইনজুরির কারনে একের পর এক খেলোয়াড় সিরিজ থেকে ছিটকে পড়েন। শেষ পর্যন্ত দুই নতুন মুখ নিয়ে একাদশ সাজায় ভারত। তাতে এই সিরিজের সর্বমোট ২০জন খেলোয়াড়কে খেলানোর বিশ্ব রেকর্ড গড়ে টিম ইন্ডিয়া। ২০১৩-১৪ সালে অ্যাশেজ সিরিজে সর্বোচ্চ ১৮ খেলোয়াড়কে ব্যবহার করেছিলো ইংল্যান্ড।
ভারতের বিশ্বরেকর্ড গড়ার ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। আগে ব্যাট করার সুবিধাটা কাজে লাগাতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও মার্কাস হ্যারিস। প্রথম ওভারের শেষ বলে ওয়ার্নারকে ১ রানে বিদায় দেন ভারতের পেসার মোহাম্মদ সিরাজ।
নবম ওভারের প্রথম বলে আরেক ওপেনার হ্যারিসকে থামান এ সিরিজে প্রথমবারের মত খেলতে নামা ভারতের আরেক পেসার শারদুল ঠাকুর। সিরিজের প্রথম সুযোগ পাওয়ায় হ্যারিস করেন ৫ রান।
শুরুতেই ১৭ রানে ২ উইকেট পতনের পর ধাক্কা কাটিয়ে উঠে অস্ট্রেলিয়া। লাবুশেন ও আগের টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান স্টিভেন স্মিথ, দলকে অস্বস্তিকর অবস্থা থেকে টেনে তুলেন। মধ্যাহ্ন-বিরতি পর্যন্ত আর কোন উইকেট পড়তে দেননি লাবুশেন ও স্মিথ।
তবে বিরতির পর স্মিথকে আউট করে ভারতকে দারুন এক ব্রেক-থ্রু এনে দেন অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা অফ-স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর। ৭৭ বলে ৫টি চারে ৩৬ রান করেন স্মিথ। আউট হওয়ার আগে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে তৃতীয় উইকেটে লাবুশেনের সঙ্গে ১৫৬ বলে ৭০ রান যোগ করেন করেন স্মিথ।
স্মিথকে নিয়ে দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করার পর ম্যাথু ওয়েডকে নিয়ে শতরানের জুটি গড়েন লাবুশেন। চা-বিরতি পর্যন্তও অবিচ্ছিন্ন ছিলেন তারা। লাবুশেন ৭৩ ও ওয়েড ২৭ রান নিয়ে বিরতিতে যান।
অবশ্য বিরতির আগেই আউট হতে পারতেন লাবুশেন। দু’বার জীবন পান তিনি। ব্যক্তিগত ৩৭ রানে ভারতের পেসার নবদীপ সাইনির বলে গালিতে ক্যাচ ফেলেন ভারতের অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানে। আর হাফ-সেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে থাকতে লাবুশেনকে জীবন দেন চেতেশ্বর পূজারা। বোলার ছিলেন ভারতের হয়ে অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা বাঁ-হাতি পেসার টি নটরাজন।
দু’বার জীবন পেয়ে বিরতির পর ক্যারিয়ারের ১৮তম টেস্টে পঞ্চম ও চলতি সিরিজে প্রথম সেঞ্চুরি করেন লাবুশেন। গত ম্যাচে করেছিলেন ৯১ রান।
সিরাজের করা ৬৩তম ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি দিয়ে তিন অংকে পৌঁছান লাবুশেন। সর্তীথের সেঞ্চুরির আনন্দের মাঝে থামতে হয় ওয়েডকে। ৬টি চারে ৮৭ বলে ৪৫ রান করেন ওয়েড। চতুর্থ উইকেটে ১৭৯ বলে ১১৩ রান যোগ করেন লাবুশেন ও ওয়েড।
ওয়েডকে ফিরিয়ে ভারতকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ করে দেয়া নটারাজনই পরের ওভারে আবারো অস্ট্রেলিয়া শিবিরে আঘাত হানেন। এবার তুলে নেন সেঞ্চুরিয়ান লাবুশেনকে। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ২০৪ বলে ৯টি চারে ১০৮ রান করা লাবুশেন।
দলীয় ২১৩ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে দিনের শেষটা রঙ্গীন করার পরিকল্পনায় ছিলো ভারত। কিন্তু ভারতের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে আর কোন উইকেটের পতন হতে দেননি ক্যামেরুন গ্রিন ও অধিনায়ক টিম পাইন। ষষ্ঠ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৬১ রানের জুটি গড়ে দিন শেষ করেন গ্রিন ও পাইন।
গ্রিন ৭০ বলে ৩টি চারে ২৮ ও পাইন ৫টি চারে ৬২ বলে ৩৮ রান করে অপরাজিত আছেন। ভারতের নটরাজন ৬৩ রানে ২টি, সিরাজ-শারদুল ও সুন্দর ১টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
অস্ট্রেলিয়া : ২৭৪/৫, ৮৭ ওভার (লাবুশেন ১০৮, ওয়েড ৪৫, নটারাজন ২/৬৩)।