ব্রেক্সিট নিয়ে চূড়ান্ত প্রস্তাব দিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

চুক্তির মাধ্যমে ব্রেক্সিট সম্পন্ন করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে চূড়ান্ত প্রস্তাব পেশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বোরিস জনসন। ইইউ এ প্রস্তাবে সায় না দিলে ব্রিটেন চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট সম্পন্ন করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার নতুন এ প্রস্তাব সম্পর্কে বিস্তারিত জানান বোরিস জনসন। তিনি এ প্রস্তাবকে উভয় পক্ষের জন্যই গঠনমূলক এবং যুক্তিযুক্ত বলে দাবি করেছেন। নতুন প্রস্তাবটিতে তিনি আইরিশ সীমান্তের বিতর্কিত ‘ব্যাকস্টপ’ ব্যবস্থা বাদ দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থারও প্রস্তাব রাখেন।

প্রস্তাবে আয়ারল্যান্ডে সব দ্বীপ নিয়ে একটি বিধিসম্মত অঞ্চল গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে, যার আওতায় থাকবে সব পন্য। এভাবে আয়ারল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের মধ্যে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চেকিং এড়ানো যাবে।

উত্তর আয়ারল্যান্ডের এসেম্বলিতে আগে এ ব্যবস্থা অনুমোদন পেতে হবে এবং এটি অব্যাহত রাখতে গেলে চারবছর পরপর ভোট অনুষ্ঠান করতে হবে।
ইউরোপীয় কমিশন বলেছে, তারা প্রস্তাবটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে দেখবে।

ব্রেক্সিট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়ে চলতি বছরের গত মে মাসে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তিনি সরে দাঁড়ানোর পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী বরিস জনসন।

নির্বাচিত হওয়ার পর আগামী ৩১ অক্টোবর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পথে হাঁটারও ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন তিনি।

জনসন সরকার জোর দিয়ে বলেছে, ব্রিটেন আর চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য ব্রেক্সিট পেছানোর আবেদন করবে না।

এ সম্পর্কে বুধবার কনজারভেটিভ পার্টিতে এক ঘোষণায় জনসন বলেন, তার ব্রেক্সিট প্রস্তাবের একমাত্র বিকল্প হচ্ছে কোনো চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট হওয়া।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জেন ক্লদ জাঙ্কারকে ব্রেক্সিট পরিকল্পনা জানিয়ে লেখা চিঠিতে জনসন বলেছেন, যুক্তরাজ্যের জনগণের ইইউ ছাড়ার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানান।

সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, এই পরিকল্পনা নিয়ে ইইউ’র সঙ্গে দশ দিন মেয়াদি আলোচনা করতে চায় ব্রিটেন যাতে ১৭ অক্টোবরের ইইউ সম্মেলনেই চুক্তি চূড়ান্ত করা যায়।

তবে অনেক কূটনীতিকেরই আশঙ্কা ব্রিটেন চুক্তিহীন ব্রেক্সিট কিংবা ব্রেক্সিটে আরো দেরির দিকেই এগুচ্ছে। কারণ, তাদের মতে ব্রিটেন সরকারের প্রস্তাবটি ৩১ অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। তবে জনসন বলছেন, চুক্তি করা নিয়ে আরো দেরী করা অনর্থক এবং ব্যয়বহুলও।

জনসনের প্রস্তাব নিয়ে ইউরোপীয় কূটনীতিক এবং কর্মকর্তারা শীতল প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন এ প্রস্তাবকে মূলত ত্রুটিপূর্ণ বলেও বর্ণনা করেছেন।

ওদিকে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ব্রেক্সিট বিরোধীরাও এ প্রস্তাবে আরেকটি গণভোটের প্রতিশ্রুতি না থাকলে তা সমর্থন করবে না বলে জানিয়েছে।

আজকের বাজার/এমএইচ