ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ

ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট দেন বিধানসভা ও রাজ্যসভার সদস্যরা।

পার্লামেন্টের সদস্যরা সবুজ ব্যালট পেপারে ভোট দিয়েছেন এবং বিধায়করা গোলাপি ব্যালট পেপারে। সকালেই সংসদে গিয়ে প্রথম ভোট দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

দলিত সম্প্রদায়ের রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে বিরোধীদলীয় প্রার্থী মীরা কুমারের লড়াই হলেও, অঙ্কের হিসাবে কোবিন্দই এগিয়ে আছেন। ধারণা করা হচ্ছে কোবিন্দের পক্ষে ৬২ শতাংশ ভোট পড়তে পারে। আর তেমন হলে তিনিই হবেন ভারতের ১৪তম রাষ্ট্রপতি।

সাধারণ নির্বাচনের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফাত রয়েছে। সাধারণ নির্বাচনে একটি ভোটের মূল্য এক। কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদাতাদের ভোটের মূল্য এক জটিল পদ্ধতিতে নির্ধারিত হয়। লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্য যাঁরা, তাঁদের একেকজনের ভোটের মূল্য ৭০৮, রাজ্য বিধানসভার সদস্যদের ভোটের মূল্য নির্ধারিত হয় সেই রাজ্যের বিধানসভার মোট আসন ও জনসংখ্যার নিরিখে। সবচেয়ে বেশি ভোট মূল্য উত্তর প্রদেশের বিধায়কদের, ২০৮। সবচেয়ে কম সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশের বিধায়কদের, ৮। এবারের ভোটে সাংসদেরা ভোট দেবেন সবুজ ব্যালটে। বিধায়কদের গোলাপি ব্যালটে। রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্যরা এই ভোটে অংশ নিতে পারেন না। এবারের ভোটে অংশ নেবেন লোকসভার ৫৪৩ ও রাজ্যসভার ২৩৩ জন সদস্য এবং দেশের মোট ২৯টি রাজ্য এবং দিল্লি ও পদুচেরি দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ৪ হাজার ১২০ জন বিধায়ক।

সব ভোটদাতার ভোট ধরলে এবারের নির্বাচনে মোট ভোট মূল্য ১০ লাখ ৯৮ হাজার ৯০৩। এর মধ্যে সাংসদদের ভোট মূল্য ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৪০৮, বিধায়কদের ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৪৯৫।

মোট ভোট মূল্যের অর্ধেকের অন্তত একটি ভোট বেশি পেলেই একজন প্রার্থী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হবেন।

ভোট গণনা হবে ২০ জুলাই। দেশের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৪ জুলাই। নতুন রাষ্ট্রপতি শপথ নেবেন ২৫ তারিখ।

এদিকে দলিত নেতা রামনাথ কোবিন্দই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হতে যাচ্ছেন বলে জোরালো গুঞ্জন শুরু হয়েছে। রাম নাথ কোবিন্দ কানপুর থেকে উঠে আসা বিজেপির দলিত নেতা। তিনি দলিত সমাজের প্রতিনিধি। ১৯৯৪-২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন।

১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত কোবিন্দ বিজেপির তফসিলি মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন। ২০১৫ সালের ৮ আগস্ট তিনি বিহারের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নেন।

আবার বিরোধী দলগুলোও যখন মীরা কুমারকে তার প্রতিদ্বন্বী হিসেবে নির্বাচন করেছে প্রার্থী করেছে তখন তারাও মনে করেছে, একজন দলিত প্রার্থীকে সমস্ত বিরোধী দল সমর্থন করবে এবং রাজনৈতিক বাধা ততটা দেখা দেবেনা।

এর আগে ১৩ বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছে ভারত। ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রণব মুখার্জী। তিনি ইউপিএ প্রার্থী ছিলেন। ৭ লাখ ১৩ হাজার ৭৬৩ ভোট পেয়ে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

আজকের বাজার: আরআর/ ১৭ জুলাই ২০১৭