‘ভিক্ষুক খুব কম, যা আছে বেশির ভাগই প্রফেশনাল’

দেশে ভিক্ষুক খুব কম মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, যারা আছে তাদের বেশির ভাগই প্রফেশনাল ভিক্ষুক, অভাবী ভিক্ষুক নেই। তাদেরকে অনেক চেষ্টা করেও এই পেশা থেকে ফেরাতে পারছি না।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা অডিটোরিয়ামে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, আমার হিসেবে দেশে প্রায় ৬ লাখের মত ভিক্ষুক আছে। যাদেরকে কোনো মতেই এই ভিক্ষাবৃত্তির বাইরে নিয়ে আসা সম্ভব না। যতই আমরা তাদেরকে বাড়ি-ঘর বা অন্য কিছু দিয়ে সহযোগিতা করি না কেন, কিছুদিন পর তারা ভিক্ষা পেশায় চলে যাচ্ছে।

দুর্নীতি বিরোধী সপ্তাহ-২০১৮ উপলক্ষে দুদকের পক্ষ থেকে শ্রেষ্ঠ মহানগর, জেলা ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

দেশে বর্তমানে দারিদ্রতা কমেছে উল্লেখ করে আবুল মাল বলেন, এখন অভাবে কেউ মারা যাচ্ছে এমন চিত্র আপনারা দেখতে পাবেন না। অথচ আমার শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের শুরুতে না খেয়ে মানুষকে মরতে দেখেছি। এখন কোথাও এমনটা দেখবেন না, তবে অসুখে মানুষ মারা যেতে পারে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরে লোভকে দমন করার জন্য অন্যরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তা হচ্ছে সরকারি চাকুরীজীবীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করে দেয়। যাতে করে একটা পরিবার ভালোভাবে চলতে পারে, বাঁচতে পারে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারি কোনো কর্মচারী ১৬ হাজার টাকার নিচে বেতন পায় না। আমরা মনে করি ১৬ হাজার টাকা নিম্ন পর্যায়ের মানুষের জন্য যথেষ্ট। কিন্তু মানুষ যখন দুর্নীতি অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়, তখন পরিবর্তন করতে একটু সময় লাগে। আমরা শুদ্ধাচারের মাধ্যমে পরিবর্তনগুলো করতে চাচ্ছি, এগুলো সুদুর প্রসারী এবং সময় সাপেক্ষ।

তিনি বলেন, আগামি নির্বাচনে যদি শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসতে পারে, তখন দেশে আর কোনো দারিদ্রতা থাকবে না। নতুন প্রজন্ম তখন শুদ্ধাচারেরর কৌশল চর্চা করবে। এই শুদ্ধাচারের মাধ্যমে সমাজে মৌলিক পরিবর্তন আসবে। আমরা এমন একটা সমাজ সৃষ্টি করতে চাচ্ছি, যেখানে শুদ্ধাচার অটোমেটিক মানুষ অনুশীলন করবে। যেখানে মানুষের মিথ্যা কথা বলার প্রয়োজন হবে না।

অর্থমন্ত্রী বলেন, তখন দুদকের কাজ হবে শুদ্ধাচার প্রচার করা। শাস্তির ব্যবস্থাও থাকা দরকার, তবে দুদকের এটা মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত হবে।

সভাপতির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমরা ইদানিং লক্ষ্য করছি ব্যবসায়ীক কিছু কোম্পানি আর্থিক বিবরণী দিচ্ছেন সেটা সম্ভবত সঠিক নয়। সেটি করছে কোন সিএ ফার্ম। অমরা অবশ্য এটা নিয়ে তদন্তে যায়নি।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংকে ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট জমা দিচ্ছেন এক রকম। আবার একই ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ইনকাম টক্সে অফিসে তাদের হিসাবটা দিচ্ছেন ভিন্ন। আমি নিজে এই অভিযোগের বিষয়টি শুনে হতভম্ব হয়েছি।

অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, অভিযোগটা যদি সত্যি হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে আপনি কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দেখবেন কি না। বা আমাদেরকে বললে দুদক বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে চায়।

আজকেরবাজার/এস
.