মহাকবি মাইকেল মধুসূদনের ১৯৭তম জন্মদিন আজ

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ ও কবিতায় অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৭তম জন্মদিন আজ। তিনি যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।

মহাকবি মাইকেলের জন্মদিনে সাগরদাঁড়ির মধুসুদন একাডেমিসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি আয়োজন করছে।

প্রকৃতির অপূর্ব লীলাভূমি সাগরদাঁড়ি গ্রামে তার শৈশব ও কৈশোর কাটলেও পরে তিনি পরিবার-পরিজনের সঙ্গে বসবাস করেন কলকাতার খিদিরপুরে। তবে সাগরদাঁড়িতে বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে চলা স্রোতস্বিনী কপোতাক্ষকে তিনি কখনো ভোলেননি। তাই সুদূর ভার্সাই নগরীতে বসেও তিনি লিখেছিলেন- ‘সতত হে নদ তুমি পড় মোর মনে, সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে।’

কবির বাবা রাজনারা়ণ দত্ত কলকাতার ওকালতি করতেন। মা জাহ্নবী দেবী গুণবতী রমণী ছিলেন। মধুসূদন বাল্যকালেই মায়ের কাছে রামায়ণ,মহাভারত, চণ্ডীর মতো কাব্যছন্দে রচিত হিন্দু পুরাণ সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। সাগরদাঁড়ি সংলগ্ন শেখপুরা গ্রামের মৌলভী লুৎফুল্লাহর কাছে ফারসি ভাষাও আয়ত্ত করেন তিনি। ১৮৫৩ সালে খ্রষ্টধর্ম গ্রহণ করেন কবি। তখন থেকে তার নামের সঙ্গে “মাইকেল” যুক্ত হয়।

মধুসূদন দত্ত মাত্র চার-পাঁচ বছর সাহিত্যচর্চা করে বাংলা সাহিত্যকে উর্বর করেছেন। তিনি পদ্মাবতী নাটক, তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, ‘একেই কি বলে সভ্যতা” ও “বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ” নামে দুটি প্রহসন. মেঘনাদবধ কাব্য, ব্রজাঙ্গনা কাব্য, কৃষ্ণকুমারী নাটক, বীরাঙ্গনা কাব্য ও চতুর্দশপদী কবিতা রচনা করেন। ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন কলকাতার আলীপুর হাসপাতালে মারা যান মহাকবি।

কবির জন্মদিন উপলক্ষে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ২২ জানুয়ারি সাগরদাঁড়িতে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা শুরু হয়েছে। মধুমেলা উপলক্ষে স্মরণিকা প্রকাশসহ নানা আয়োজন ও বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। মধূমেলাকে ঘিরে মধুভক্ত ও পর্যটকদের পদচারণায় কপোতাক্ষপাড়ের সাগরদাঁড়ি উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে।

আজকের বাজার/এমএইচ