মাধবপুরের চা শ্রমিকদের দুর্দশার জীবন

বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল চা। সারাদেশে চা বাগানের সংখ্যার দিক থেকে হবিগঞ্জের অবস্থান দ্বিতীয়। এ জেলায় উৎপাদিত চা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ বছর হবিগঞ্জে চায়ের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে বিভিন্ন বাগান সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে চা পাতার উৎপাদন শুরু হয়। চলে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে উৎপাদনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। এতে চায়ের উৎপাদন আরও বাড়তে পারে।

কিন্তু বাড়ছেনা চা শ্রমিকদের জীবন ব্যবস্থার মান। অতন্ত দুর্দশাময় জীবন পাড় করছে এসব মানুষ গুলো। ৭ ফুট বাই ১৪ ফুট ঘরে পুরো পরিবারের বাস, শিক্ষা-স্বাস্থ্য নিয়েতো ভাবার সুযোগই নেই৷ উপরন্তু দ্রব্যমূল্য পাল্লা দিয়ে বাড়লেও তাঁদের বেতন সেভাবে বাড়ে না৷ এভাবে নানা বঞ্চনা নিয়ে দুর্দশার জীবন কাটাচ্ছেন হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরের চা শ্রমিকরা।

একরকম দাসের মতো জীবন কাটালেও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে উৎপাদন ধরে রেখেছেন এই চা শিল্পীরা৷ তাই জীবন সম্পর্কে শুধু আক্ষেপই ঝরে তাঁদের কণ্ঠে৷ চা বাগানের মানুষের জীবন কষ্টে-দুর্দশায় যায়৷ এখানকার মানুষ মনে করে যে, আমাদের এই রকমই দিন যাবে।

হবিগঞ্জের মাধবপুরের নারী চা শ্রমিকরা বলেন “সারাজীবন কষ্ট করে করে আমাদের দিন পার করব, যাওয়ার তো আর কোনো জায়গাও নাই৷ আর কোনো কিছু করারও নেই আমাদের৷ ভাবতে ভাবতে এরকমই জীবনযাপন পার করে দিতে হবে৷”

বেতন বৈষম্য, বাসস্থান আর শিক্ষা-চিকিৎসার দুরবস্থা নিয়ে বলতে গিয়ে এভাবে স্বর নেমে আসে তাদের। মাধবপুরের চা বাগানে বছরের পর বছর এভাবেই কাজ করছেন তারা।

বাংলাদেশে চা বোর্ডের নিবন্ধিত ১৬৬টি চা বাগানে কাজ করেন প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক৷ একটি বড় রপ্তানি খাতের চাকা চালু রাখলেও তাঁদের বেশিরভাগেরই গল্প অসহায় এমন নারী শ্রমিকদের মতোই৷

আজকের বাজার/এমএইচ