মানুষের ওপর চাঁদের প্রভাব কতটুকু?

মানুষের উপর চাঁদের কোনো প্রভাব আছে কি? বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এখনো এর কোনো অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ তবে জ্যোতিষবিদ্যায় বিশারদরা এটাকে প্রবলভাবে বিশ্বাস করেন। তাদের কাছে চাঁদের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷

মানুষের উপর পূর্ণিমার চাঁদের কোনো প্রভাব পড়ে কি? ঘুমে ব্যাঘাত, আরো বেশি দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা ও অপরাধের ঘটনার সঙ্গে এর সম্পর্ক আছে কি? মানুষের আচরণের উপর পূর্ণিমার প্রভাব আছে বলে বিশ্বাস করেন জার্মানির ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ৷

এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ইন্টারনেটেও কোটি কোটি ইউরোর ব্যবসা চলছে৷ চুল কাটা, গাছ লাগানো, অপারেশন – চাঁদের সঠিক অবস্থান অনুযায়ী নাকি সবকিছু করা উচিত৷ তবে এ ধরনের পরামর্শ প্রায়ই পরস্পরবিরোধী হয়৷

এমনকি অরগ্যানিক পদ্ধতিতে চাষবাসের ক্ষেত্রেও পরামর্শ দেওয়া হয়৷ একটি সূত্র বলছে, শুক্লপক্ষে, অন্য একটি বলছে পূর্ণিমার সময় মাঠে বীজ বপন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়৷ তবে এই ধরনের পরামর্শের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই৷

পূর্ণিমার সময় দুর্ঘটনা ও অপরাধের ঘটনা বেড়ে যায়, এমন দাবিরও কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পাওয়া যায়নি৷

তবে পূর্ণিমার সময় নাকি সত্যি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে৷ একটি গবেষণা অনুযায়ী, এ সময় ঘুম আসতে ৫ মিনিট বেশি সময় লাগে এবং মোট ঘুমের সময় ২০ মিনিট কমে যায়৷

তবে এই গবেষণার ফলাফল নিয়ে সংশয় রয়েছে, কারণ, এ ক্ষেত্রে যাদের পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল, বেশি বয়সের কারণে এমনিতেই তাদের ঘুম নিয়ে সমস্যা রয়েছে৷ নারীদের ঋতুচক্রও চাঁদের সঙ্গে খাপ খায় না৷ কারণ, ঋতুচক্রের কোনো নির্ধারিত সময়কাল নেই৷ অন্যদিকে প্রতি ২৯ দশমিক ৫ দিন পর পর পূর্ণিমা আসে৷

মোটকথা, মানুষের উপর চাঁদের প্রভাব আছে কিনা, বিজ্ঞান এখনো তার কোনো স্পষ্ট উত্তর পায়নি৷ তা সত্ত্বেও অনেকে চাঁদের ক্ষমতায় বিশ্বাস করেন, চাঁদকে ভালোবাসেন, শ্রদ্ধা করেন৷ তাতে কিছু আসে যায় না৷ বিজ্ঞান সব কিংবদন্তির ব্যাখ্যা না দিলেই বোধ হয় ভালো হয়৷

তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভেলে

আজকের বাজার/এএল