মায়ানমারে কার্টুন এঁকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিদ্রুপ

সারা বিশ্ব যখন রোহিঙ্গা সংকটে উদ্বিগ্ন, ঠিক তখন মায়ানমারের ভেতরের পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। দেশটির কার্টুনিস্টরা রোহিঙ্গাদের নিয়ে নানা ধরনের রসবোধ জুড়ে দিয়ে কার্টুন তৈরি করে হাসির খোরাক জোগাচ্ছেন।

মায়ানমারের কার্টুনিস্টদের আঁকা এসব কার্টুন আবার খুব দ্রুত সামাজিক যোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বিশ্বজুড়ে যে ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, মায়ানমারের ভেতরের মনোভাব সেটির পুরোপুরি বিপরীত।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, মায়ানমারের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে যেসব কার্টুনিস্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন, তারা এখন রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে নানা ধরনের বিদ্রুপাত্মক কার্টুন আঁকছে। এর মধ্যে যে কার্টুনটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনেক প্রচার হয়েছে সেটির শিরোনাম হচ্ছে, ‘কুমিরের কান্না’।

ওই কাটুনটিতে দেখা যাচ্ছে, আহত কিছু প্রানিদের মধ্য থকে একদল কুমিরের ছানা সাঁতার কেটে পশ্চিমা ক্যামেরাম্যানের কাছে গেছে। সেখানে গিয়ে মাইক্রোফোনের সামনে একটি কুমির বলছে, ” আমি মাতৃভূমি ছাড়তে বাধ্য হয়েছি।”

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি এ কার্টুনটিতে স্পষ্টত ইঙ্গিত করা হচ্ছে। মিয়ানমারের প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট ৫৮ বছর বয়সী ইউ নাইং বলেন, রোহিঙ্গারা যেসব কথা বলছে সেগুলো সত্য নয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি কাজের মাধ্যমে শুধু চিন্তার খোরাক জুগিয়েছি। আমরা দেশপ্রেমে চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কার্টুন আঁকি।

মায়ানমারের সামরিক শাসকরা কয়েক দশক ধরে সে দেশের জনসাধারণকে প্রযুক্তি, বিতর্ক এবং মতামত থেকে দূরে রেখেছিল। সে দেশের জনসাধারণ কোন বিষয়ে মতামত প্রকাশ করতে পারতো না। কিন্তু কয়েকবছর আগে মিয়ানমার কিছুটা উন্মুক্ত হয়েছে।

এখন রোহিঙ্গা বিরোধী নানা ধরনের কার্টুন এবং মতামত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। রোহিঙ্গা বিরোধী সে সব পোস্টে ‘লাইক’, ‘কমেন্ট’ পড়ছে এবং শেয়ার হচ্ছে।

মায়ানমারের ভেতরে অনেকেই রোহিঙ্গাদের সে দেশের নাগরিক হিসেবে গণ্য করে না। সেনাবাহিনীর নিপীড়ন থেকে বাঁচতে গত আগস্ট মাস থেকে প্রায় চার লাখ ত্রিশ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭