মা ছাড়া শিশুদের গ্রাম

শিশুর নিরাপদ আশ্রয়স্থল মাতৃকোল। কবির ভাষায়, বন্যেরা বনে সুন্দর আর শিশুরা মাতৃকোড়ে। অথচ আজ জানা গেল এক অদ্ভুদ গ্রামের খবর। যেটা মা ছাড়া শিশুদের গ্রাম নামে পরিচিত। ইন্দোনেশিয়ার একটি ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা সুসিয়াবতী৷ গ্রামটি ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লম্বকে। ইন্দোনেশিয়ার এই গ্রামে কারও মা-ই নেই৷

‘মাকে খুব মিস করি, মাঝে মাঝে খুব একলা আর বিষন্ন লাগে৷ মা-বাবার মধ্যে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরই আমার মা কাজ নিয়ে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন৷’ কিশোরী এলি সুসিয়াবতী গত ছয় বছর ধরে তার মাকে দেখেনি৷ তাই তাকে তার মায়ের কথা জিজ্ঞেস করতে গেলেই আবেগ বিহ্বল হয়ে পড়ে সুসিয়াবতী৷

১১ বছর বয়স থেকে সুসিয়াবতী তার মায়ের কোলেপিঠেই মানুষ হয়েছে। সুসিয়াবতীর মতন একাধিক সন্তানই একাকীত্বে ভোগে৷কিন্তু তাদের মায়েদের কিছু করারই নেই৷ একটা সময় ছিল যখন ইন্দোনেশিয়া থেকে বহু মা-ই পেটের দায়ে বিদেশে গিয়েছেন৷ সুসিয়াবতীর মা ও তাদের মধ্যে একজন৷ আর এই গ্রামে সুসিয়াবতীর মতন একাধিক সন্তান রয়েছে৷ যারা মাতা পিতাহারা৷ অভিবাসী কর্মীদের এই সব পরিবার বিদেশ থেকে তাদের পাঠানো অর্থের উপরই নির্ভরশীল৷

তবে বিদেশে গিয়ে টাকা রোজগারের বিষয়টি কিন্তু এতো সহজ নয়৷ অনেক কষ্ট করার পর অল্পসংখ্যক কিছু টাকা রোজগার করতে পারেন এই মায়েরা৷ সেই টাকায় কোনরকমে টেনেটুনে সংসার চলে তাদের৷ পাশাপাশিই তাদের সন্তানদের শিতি করতেও হয় তাদেরকে৷ তারজন্যও প্রয়োজন অনেক টাকার৷ সুসিয়াবতির মায়ের থেকে সেই ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তার মা বলেন, প্রতিবার তার মেয়েকে ছেড়ে যেতে গেলে তার ভীষন কষ্ট হয়৷ কিন্তু কোনও উপায়ও নেই৷ বুক ফেটে গেলেও সে পেটের দায়ে আবারও বিদেশে ফিরে যেতে বাধ্য হয় তারা। এভাবেই দিনের পর দিন চলছে তাদের জীবনযাত্রা৷

আজকেরবাজার: আরআর/ ২৪ এপ্রিল ২০১৭