মুক্তিযুদ্ধের চার প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মহলকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় গৃহীত চারটি প্রকল্পের কাজ দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করার পাশাপাশি প্রকল্পগুলোকে যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আমি চাই এই প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুত সম্পন্ন হোক’।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে (পিএমও) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উক্ত চারটি প্রকল্পের পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা প্রত্যক্ষকালে একথা বলেন।

তিনি প্রকল্পগুলোর যথাযথ রক্ষনাবেক্ষণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। প্রকল্প চারটি হচ্ছে- ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভনির্মাণ প্রকল্প (৩য় পর্যায়), অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্প,মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প এবং মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্যানোরমা নির্মাণ প্রকল্প।

এসব প্রকল্পের মধ্যে প্রথম প্রকল্পের জন্য ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং ২০১৮ সালের জানুয়ারী থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজের শতকরা ৩০ শতাংশ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।

স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের (৩য় পর্যায়) আওতায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ দেয়ার স্থানটিতে এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দখলদার পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থানে দুইটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রদানের স্থানটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ দানরত ১৮ ফুট দীর্ঘ একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে।

অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মাণাধীন আবাসন প্রকল্পে ‘বীর নিবাস’ শিরোনামে ১৪ হাজার এক তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ২৫৩ কোটি টাকা। জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী এই ভবনগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের উপহার হিসেবে প্রদান করবেন।

৪ ডেসিমাল জমির ওপর ৯শ’ স্কয়ার ফুট আয়তনের এসব এক একটি ভবনের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ।তৃতীয় প্রকল্পের আওতায় জনগণের সামনে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার জন্য মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরে ‘মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র’ নির্মাণ করা হবে।

যে প্রকল্পটি বর্তমানে ৮১ দশমিক ৭৬ একর জমির ওপর বাস্তবায়িত হচ্ছে,এরজন্য আরো অতিরিক্ত ৪৯ দশমিক ২৭ একর জমির প্রয়োজন পড়বে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে একটি প্যানোরমা নির্মাণের প্রস্তাব সংক্রান্ত প্রকল্পও প্রধানমন্ত্রীর নিকট উপস্থাপন করে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে পরামর্শ দেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক,প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ,জ্বলানি এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড.তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব:) তারিক আহমেদ সিদ্দিক,জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী আফম রুহুল হক,প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো.নজিবুর রহমান,পিএমও সচিব সাজ্জাদুল হাসান,প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং স্থাপত্য বিভাগের প্রধান স্থপতি এএসএম আমিনুর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী হাশেম খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক নিসার হোসেন ও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব এসএম আরিফুর রহমান পাওয়ার পয়েন্টে প্রকল্পগুলো উপস্থাপন করেন। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান