মুফাসির পরিষদের বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও বিভ্রান্তি ছড়াতে যারা চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা জাতির সামনে তুলে ধরতে দেশজুড়ে খ্যাতিমান এই মুফাসিরদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় মুফাসির পরিষদ।

ইসলামের দিকে যাতে মানুষ অগ্রসর হতে না পারে সে লক্ষ্যেই অনেকেই কাজ করছে যা অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনাদায়ক। সন্ত্রাসের সাথে আলেম ওলামাদের কোন সম্পর্ক নেই, এটা আজ প্রমাণিত। তথাপি গ্রিক মূর্তি নিয়ে টালবাহানা এক ধরনের প্রতারণা। যা জাতিকে কলঙ্কিত করছে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সমস্ত অপশক্তির প্রতিবাদ করছি। সেই সাথে ওলামাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবানও জানায় তারা।

ঢাকা মহানগরী ও ঢাকা বিভাগের উদ্যোগে ৩ জুন শনিবার সকালে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে পবিত্র মাহে রমজানের তাৎপর্য বিষয়ক আলোচনা সভা ও বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

মুফাসির পরিষদের ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান আনসারীর পরিচালনায় ও ঢাকা মহানগরী সভাপতি মুহাদ্দিস মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নিজামী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি জেনারেল ডক্টর খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, ইসলাম শান্তিতে বিশ্বাস করে, অন্যের হক নষ্ট করা কিংবা কারো প্রতি যুলুম নির্যাতন করা ইসলাম পরিপন্থি বলেই সকলের কাছে স্বীকৃত। মনে রাখতে হবে ছোট খাটো ভুল ত্রুটি ভুলে গিয়ে ঐক্যের ভিত্তিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই একজন মুফাসিররের কর্তব্য। খুটিনাটি সুন্নাত, মুস্তাহাব, নফল নিয়ে ভেদাভেদ বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় ইসলামের দুশমনেরা আমাদের বিভেদের সুযোগে ইসলামের সর্বনাশ করবে।

তিনি আরো বলেন, আমাদেরকে দৃঢ়তার সাথে ঘোষণা দিতে হবে কোনো জঙ্গি সন্ত্রাসীরা আদৌ মুসলমান নয়, তারা নিকৃষ্ট মুনাফিক। ইসলামী বিধান ও ইসলাম প্রশ্নবিদ্ধ করাই তাদের কুমতলব। দেশী-বিদেশী ইসলাম বিরোধী চক্র ইসলামী জিহাদকে অপব্যাখা করে বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে মানবতার জীবন বিপন্ন করছে। ঐ সকল উগ্র জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

এছাড়াও সম্মেলনে রমযানের তাৎপর্য জাতীয় ঐক্য ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে আলেমদের ভূমিকাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় মুফাসির পরিষদের কেন্দ্রিয় সভাপতি মুহাদ্দিস আমিরুল ইসলাম বিলালী, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মুফাসিরে কুরআন টেকের হাটের পীর হযরত মাওলানা কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী, উত্তর বাড্ডা কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন মোল্লা, মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা নুরুল আমীন, মুফতী মো. মিজানুর রহমান, মুফাস্সির মাওলানা গাজী আবুল কাশেম, পরিষদের কেন্দ্রিয় সহ-সভাপতি মাওলানা হাফেজ কাজী মারুফ বিল্লাহ, নাসির ইকবাল বিন শাফীসহ আরো অনেকে।

এতে অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, বিনোদন দিয়ে তাফসীর মাহফিল আলেমদের মুখে শোভা পায়না। তাফসীর কুরআন খুব কঠিন দায়িত্ব এটা সকলের পক্ষে পালন করা সম্ভব নয়। মানুষকে হাসাতে ও কাঁদাতে পারলেই ভাল বক্তা হওয়া যায় না। সেজন্য প্রচুর জ্ঞান গবেষণার দাবী রাখেন। সকল মত পার্থক্য ভুলে গিয়ে ত্যাগের চরম দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ থাকা।

ইসলাম শান্তিতে বিশ্বাস করে। অন্যের হক নষ্ট করা কিংবা কারো প্রতি যুলুম নির্যাতন করা ইসলাম পরিপন্থি বলেই সকলের কাছে স্বীকৃত। মনে রাখতে হবে ছোট খাটো ভুল ত্রুটি ভুলে গিয়ে ঐক্যের ভিত্তিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই একজন মুফাস্সিরের কর্তব্য।

কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, মুফাসির পরিষদের সদস্য মানেই তাকে মনে রাখতে হবে আমার কাজ আছে। আমরা চাই অপসংস্কৃতির বিপরীতে শিক্ষা ও বিজ্ঞান ভিত্তিক যুগোপযোগি তাফসীর চর্চায় মুফাস্সিরদের এগিয়ে আসেত হবে। তাছাড়া দেশ ও জাতির সেবায় আপনাদেরকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

আজকের বাজার : এলকে /এলকে ৬ জুন ২০১৭