ভারতকে ৭ উইকেটে হারালো বাংলাদেশ

টি-টোয়েন্টিতে দু দলের আগের ৮ দেখায় ফল বাংলাদেশের পক্ষে যায়নি একবারও। বেশ কয়েকবার তীরে গিয়ে তরী ডুবানোর আক্ষেপেও পুড়তে হয়েছে কোটি ভক্তকে। বিশেষ করে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে ভারতকে টুর্নামেন্ট থেকেই বিদায় করে দেওয়ার মত জয় হাতছানি দিয়ে ডাকছিল। চাপ সামলানোর মস্তিষ্কের খেলায় সেদিন ৩ বলে দুই রান নিতে পারেনি মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকরা। এক রানের সেই হারের ক্ষত সহজে ভুলবেনা বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা।

২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে আরও একবার এসেছিল সেই সুযোগ, বিশ্বকাপে হারের ক্ষত কিছুটা হলেও লাঘব হত সেই জয়ে। সাব্বির রহমানের ৭৭ রানের অসাধারন এক ইনিংসে ভর করে বাংলাদেশ পায় ১৬৬ রানের পুঁজি। জবাবে রোহিত শর্মার ৫৬ রানের ইনিংসের পরও ভারতকে প্রায় আঁটকেই দিয়েছিল। শেষ তিন ওভারে ৪১ রান দরকার এমন পরিস্থিতিতে মাত্র ৮ বলে ২৯ রানের অতিমানবীয় ইনিংসে হতাশাই সঙ্গী হয় টাইগার ভক্তদের।

ওই ম্যাচের পর আজই টি-টোয়েন্টিতে প্রথম দেখা হল দু দলের। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটে বয়ে যাওয়া ঝড়ের পর জয়-পরাজয় ছাপিয়ে ভালো খেলাটাই ছিল মূল লক্ষ্য। সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞায় টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব পাওয়া মাহমুদউল্লাহতো বলেই দিয়েছেন নিজেদের কন্ডিশনে ভারত কতটা শক্ত প্রতিপক্ষ জানেন তারা, ইতিবাচক ক্রিকেট খেলাতেই নজর তাদের।

জবাবে ভালো শুরুর ঈঙ্গিত দিয়েও আবারও ব্যর্থ হন লিটন কুমার দাস, দিপক ওভারের প্রথম ওভারেই ফেরেন ৭ রান করে। এরপর অভিষিক্ত নাইম শেখ ও সৌম্য সরকারের ৪৬ রানের জুটিতে প্রাথমিক বিপর্যয় কাটায় বাংলাদেশ। ২৮ বলে ২ চার ১ ছক্কায় যুজবেন্দ্র চাহালের বলে ২৬ রান করে আউট হন নাইম শেখ। নাইম শেখের বিদায়ের পর মুশফিক-সৌম্য ক্রিজে অনেক্ষণ কাটিয়ে ফেললেও বলের সাথে পাল্লা দিয়ে তুলতে পারছিলেন না রান। ১০০ রানে পৌঁছাতে বাংলাদেশকে খেলতে হয় ১৫.১ ওভার।

হাতে ৮ উইকেট নিয়ে শেষ চার ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৪৪। এক পর্যায়ে সমান ৩৩ বলে সৌম্যের ৩৭ ও মুশফিকের ৩৭ কে কোনভাবেই পরিস্থিতি অনুযায়ী ইনিংসই মনে হচ্ছিলনা। ১৭তম ওভারের শেষ বলে ৩৫ বলে ৩৯ করে সৌম্যের বিদায়ে ভাঙে দুজনের ৫৫ বলে ৬০ রানের জুটি। মাহমুদউল্লাহ যখন ক্রিজে আসেন দলের প্রয়োজন ১৮ বলে ৩৫, ক্রিজে সেট ব্যাটসম্যান মুশফিক। ১৮ তম ওভারে দুজনে মিলে নেন ১৩ রান।

শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন দাঁড়ায় ২২ রান, মুশফিক যেন প্রস্তুত ছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেই ম্যাচের হতাশা ভুলিয়ে দিতে। ১৯ তম ওভারে চার বাউন্ডারিতে রান নেন ১৮, ম্যাচ নিয়ে আসেন নিজেদের হাতের মুঠোয়, নিজেও পৌঁছে যান ফিফটিতে। শেষ ওভারে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে টাইগারদের প্রয়োজন মাত্র চার। ক্রিজে মুশফিক-রিয়াদ, না এবার আর ভুল করেননি দুজন। তিন বল হাতে রেখে ভারতে বিপক্ষে দলকে এনে দেন প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়। ৪৩ বলে ৮ চার ১ ছয়ে মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৬০ রানে, দলের জয় সূচক রানে ছক্কা হাঁকান রিয়াদ, অপরাজিত ছিলেন ৭ বলে ১৫ রানে।