মুসলিম দেশগুলোর মাঝে সংঘাত বন্ধে ওআইসির ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী

মুসলিম দেশগুলোর মাঝে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থাকে (ওআইসি) তার দায়িত্ব পালন করা উচিত বলে বুধবার মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা সফররত ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাবেদ জারিফ প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

মুসলিম দেশগুলোর মাঝে বিভাজন ও সংঘাতের কারণে তৃতীয় পক্ষের ফায়দা নেয়া বন্ধে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতি জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।

‘মুসলিমরা রক্ত ঝরাচ্ছে আর অন্যরা তা থেকে ফায়দা নিচ্ছে,’ বলেন শেখ হাসিনা।

তার মতে, দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সংঘাত থাকতে পারে এবং তা দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয়ভাবে সমাধান হতে পারে।

বাংলাদেশে ঐতিহ্যগতভাবে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিরাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দুজন শিয়া মেয়েকে দত্তক নিয়েছেন।

নিজ সরকারের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮.১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং মুদ্রাস্ফীতির হার ৫.৪ শতাংশে রেখেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইরানের সাথে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে। বাংলা ভাষায় অনেক ফার্সি শব্দ সংযুক্ত হয়েছে।

এ সময় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাবেদ জারিফ তার দেশের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির শুভেচ্ছা বার্তা প্রধানমন্ত্রীকে পৌঁছে দেন।

তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

‘আমি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মুগ্ধ। আপনার (হাসিনা) ব্যক্তিগত নেতৃত্বের ফলে এটি হয়েছে,’ বলেন জাবেদ জারিফ।

তিনি বাংলাদেশের অগ্রগতিকে অনুকরণীয় কৃতিত্ব বলে বর্ণনা করেন।

বাংলাদেশ ও ইরানের মাঝে ভালো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিরাজ করছে উল্লেখ করে জাবেদ জারিফ জানান, ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তেহরান একটি সেমিনারের আয়োজন করবে।

তিনি ওআইসি ফোরামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার প্রশংসা করেন। ‘আমরা ঐক্য চাই। আমরা সৌদি আরবসহ ওআইসির সব সদস্যের সাথে ভালো সম্পর্ক চাই।’

জাবেদ জারিফ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার পর ইরানের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।

সেই সাথে তিনি ইরানের বৈজ্ঞানিক উন্নতি সম্পর্কে জানান। তিনি বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ইরান তাদের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করছে।

ইরানি মন্ত্রী বলেন, তার দেশ অস্ত্র খাতে অর্থ ব্যয় করতে চায় না।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেজা নফর এ সময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া দুই দিনব্যাপী তৃতীয় ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) ব্লু ইকোনমি মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্সে যোগ দিতে মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় আসেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ