মৌলভীবাজারের আস্তানায় বড় কেউ থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মৌলভীবাজারে পুলিশের ঘিরে রাখা দুটি জঙ্গি আস্তানায় বড় কোনো জঙ্গি থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সচিবালয়ে বুধবার (২৯ মার্চ) নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানাধীন শিববাড়ি এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শেষ হতে না হতেই বুধবার (২৯ মার্চ) ভোরের দিকে মৌলভীবাজার পৌরসভার বড়হাট এলাকায় ও সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের সরকার বাজার ফতেপুর এলাকায় দুটি জঙ্গি আস্তানা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। বাড়ি দুটি মধ্যে দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গিদের দু-একটি আস্তানার খবর আমরা পেয়েছি। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ মৌলভীবাজারের স্থানগুলোতে যায়।’ তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনী যখন ভেতরে ঢুকতে চায় তখন দেখা গেল বোমা বিস্ফোরণ ও গোলাগুলি হচ্ছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী বাড়ি ঘেরাও করে রেখেছে। বাড়িগুলো থেকে গোলাগুলি ও বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছে। বিশেষ বাহিনী সোয়াট ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী বাহিনী রওনা দিয়েছে তারা সেখানে পৌঁছালে বাকি কাজ করবে।’

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে যেটুকু পেয়েছি যেটা শহর এলাকায় সেখানে যারা অবস্থান করছে তারা ৩-৪ জন হতে পারে। খলিলপুর ইউনিয়নে আরও দু-চারজন বেশি থাকতে পারে। খলিলপুর ইউনিয়নে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে যে দু-একজন মহিলা সদস্য সেখানে থাকতে পারে। থেকে থেকে তারা বোমা ছুড়ছে। ইউনিট পৌঁছে গেলে অভিযান পরিচালনা করবে।’

সেখানে বিশেষ কেউ আছে কি না-এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘থাকতে পারে। প্রাথমিক ধারণাটা আমরা বললাম। বড় কেউ হয়তো থাকতে পারে।’

এ ক্ষেত্রেও সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নেব। তবে সোয়াট এনাফ। সিলেটে যাতে প্রাণহানি না ঘটে সে জন্য সেনাবাহিনীকে অধিকতর সতর্কতার সঙ্গে অভিযান পরিচালনার দায়িত্বটা দেওয়া হয়েছিল। এখানে যদি প্রয়োজন হয়…আমরা চাই প্রাণহানি যেন না ঘটে। প্রাণহানি কমাতে যা করা প্রয়োজন তাই করব।’

সিলেট অঞ্চলে কেন জঙ্গিদের আনাগোনা, বিশেষ কোনো সুবিধা তারা ওইসব অঞ্চলে পাচ্ছে কি না-এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, ‘কেন তারা সেখানে যায় সেগুলো আরেকটু ভালো করে অনুসন্ধান না করে বলতে পারছি না। কেন সেখানে যায়, লিঙ্কটা কী, কারা করছে নিশ্চয়ই এর পেছনে রাজনৈতিক কোনো আশ্রয় প্রশ্রয় থাকতেও পারে যেটা আমাদের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মাঝে মাঝেই বলছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিলেটে গোয়েন্দা তথ্যের আলোকে ঘেরাও করেছিলাম। মৌলভীবাজারেরটাও গোয়েন্দা তথ্যের আলোকেই শনাক্ত করেছি। সীতাকুণ্ডেও তাই। গোয়েন্দারা তৎপর রয়েছে সে জন্য ধরে ফেলেছি। জঙ্গিদের আর বাড়ার প্রশ্নই আসে না।’

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে এ ধরনের অভিযান নিয়ে খালেদা জিয়া প্রশ্ন তুলেছেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটার সঙ্গে ভারত সফরের কোনো যোগাযোগ নেই। এটা হলো আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম।’

মুফতি হান্নানের প্রাণভিক্ষার আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘মুফতি হান্নানের প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে যাচ্ছে, তার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। জঙ্গিসংক্রান্ত বিচার যেখানে যেটা যাওয়ার সেখানেই সেটা যাচ্ছে।’