যে কোন মূল্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে : মোস্তাফা জব্বার

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, নারী ও শিশুসহ সকল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা অপরিহার্য। তাই যে কোন মূল্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
আজ বুধবার ঢাকায় টেলিকম অধিদপ্তর মিলনায়তনে দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাস্তবায়নাধীন সাইবার থ্রেট ডিটেকশন এন্ড রেসপন্স প্রকল্পের অগ্রগতি, চ্যালেঞ্জসমূহ নিরসন এবং ভবিষ্যত করণীয় নির্ধারণে আয়োজিত বৈঠকে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক মো: রাশেদুল ইসলাম, বিটিসিএল মহাপরিচালক ইকবাল মাহমুদ, টেলিকম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: মহসিনুল আলম, টেলিটক-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন, আইসিটি বিভাগের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক পরিচালক তারেক এম বরকত উল্লাহ এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিচালক মো: রফিকুল মতিনসহ ডিজিএফআই, এনএসআই, র‌্যাব, বিটিআরসি, বাংলাদেশ ব্যাংক.এনটিএমসি এবং এসবিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে করণীয় বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে ডিজিটালাইজড করার পাশাপাশি দেশের নাগরিকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্বও আমাদের। প্রযুক্তি দিয়েই প্রযুক্তি অপরাধ মোকাবেলা করতে সরকার সর্বাত্মক সক্ষমতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা সংস্থা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
মোস্তাফা জব্বার ডিজিটাল প্রযুক্তি দিয়েই প্রযুক্তি অপরাধ মোকাবেলা করা হবে জানিয়ে বলেন, দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে ইন্টারনেটের ব্রডব্যান্ড সংযোগ পৌঁছে যাওয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টদের উপজেলা পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ইউনিট স্থাপন করতে হবে। এই বিষয়ে শিগগিরই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল শিল্প বিপ্লব কিংবা আগামী দিনের বিষ্ময়কর ৫জি প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রযুক্তি উপযোগী দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে নিরাপদ ইন্টারনেট অপরিহার্য। এই লক্ষ্যে লাগসই করণীয় নির্ধারণ করে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজটি একক কোন বিভাগ ও সংস্থার কাজ নয় বলে জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা সংস্থা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকলে একযোগে কাজ করলে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সহজ হবে।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আলোচিত হওয়ায় সকলের আগে ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কাজ শুরু করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাংলাদেশ প্রথম করবে এটাও কেউ ২০০৯ সালে ভাবেনি। ডিজিটাল জগৎ তার পরিধি এবং তার নিরাপত্তা একটি বিশাল বিষয়। এটা নিয়ে বিতর্ক করার সুযোগ নেই। আগামীর বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির প্রয়োজনে শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে। সেক্ষেত্রে পাঁচ বছরের শিশু থেকে নতুন প্রজন্মকে যেন নিরাপদ ইন্টারনেট দিতে পারা যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ আমরা একদিকে ইন্টারনেটে দক্ষতা অর্জন করতে বলছি, অন্যদিকে তাদের নিরাপত্তা দিতে না পারলে সেটা উল্টো ফল দেবে।
বৈঠকে ডাক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সাথে আগামী মাসে ঢাকায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সম্ভাব্য বৈঠকের আলোচ্য বিষয় নিয়ে এজেন্ডা তৈরির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়াও বাস্তবায়নাধীন সাইবার থ্রেট ডিটেকশন এন্ড রেসপন্স প্রকল্পের উদ্দেশ্য, প্রকল্পের কার্যক্রম, প্রকল্পের অর্জনসমূহ, বর্তমান অবস্থা এবং চ্যালেঞ্জসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।