রপ্তানি বৃদ্ধি ও বহুমুখীকরণে বিনিয়োগ সহায়তা কর্মসূচি চালু

রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক্সপোর্ট কম্পেটিটিভনেস ফর জবস প্রকল্প বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য,পাদুকা (চামড়া ও অ-চামড়াজাত),প্লাস্টিক এবং হালকা প্রকৌশল শিল্প খাতের কারখানা সমূহের মানোন্নয়নে এক্সপোর্ট রেডিনেস ফান্ড (ইআরএফ) নামক বিনিয়োগ সহায়তা কর্মসূচির অধীনে ‘ম্যাচিং গ্রান্ট’ বা বিনিয়োগ সহায়তা কার্যক্রম চালু করেছে।

বুধবার বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন কারিগরি সেবা,আন্তর্জাতিক মান অর্জন ও কারখানা উন্নয়নে ইআরএফ এর অধীনে পরিচালিত দুই ধরণের বিনিয়োগ সহায়তা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
ইআরএফ কর্মসূচি রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কারখানার পরিবেশগত,সামাজিক ও গুণগত মান উন্নয়ন,পণ্য ও পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়ার উন্নয়ন এবং রপ্তানিবাজারের মান, আইন ও বিধি-বিধান অনুসরণ করার ক্ষেত্রে উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগ সহায়তা দেবে।

ইআরএফ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং বিশ্বব্যাংক গ্রুপের অর্থায়নে বাস্তবায়িত একটি প্রকল্প।
এ বছর জানুয়ারি মাসে ইআরএফ-এর কার্যক্রম শুরু হয় যা’ আগামী ২০২৩ এর মার্চ পর্যন্ত চলমান থাকবে। এই কর্মসূচির আওতায় তিন ধরনের অনুদান সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে যেগুলোকে প্রকল্পে উইন্ডো-১, উইন্ডো-২ এবং উইন্ডো-৩ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। ।

প্রথমত; পরিবেশগত,সামাজিক এবং গুণগত মান উন্নত করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো সনাক্তকরণে সহায়তা (উইন্ডো-১) ইতোমধ্যে প্রকল্পের আওতাভুক্ত সংশ্লিষ্ট শিল্পখাতের প্রতিানসমূহের পরিবেশগত, সামাজিক এবং গুণগত মান উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সনাক্ত করার জন্য কারখানা পর্যায়ে মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে ।
দ্বিতীয়ত: কারিগরি সেবা, মান অর্জন ও সক্ষমতা উন্নয়নের জন্য সহায়তা (উইন্ডো-২) এর আওতায় রপ্তানি বাজারের জন্য প্রযোজ্য বিধিবিধান ও ক্রেতাদের চাহিদানুযায়ী কারখানার কর্মপরিবেশ এবং গুণগতমানের পণ্য প্রস্তুত করতে ব্যবসা,কারিগরি সেবা,মান অর্জন ও সক্ষমতা উন্নয়নের জন্য ছোট ও মাঝারি আকারের শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে বিনিয়োগ সহায়তা দেয়া হবে। এক্ষেত্রে একটি প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ চল্লিশ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত ম্যাচিং গ্রান্ট বা বিনিয়োগ সহায়তা পাবে। সহায়তা গ্রহণকারীকে ম্যাচিং গ্রান্টের বিপরীতে সর্বনিম্ন ৪০ শতাংশ বিনিয়োগ করতে হবে।

তৃতীয়ত; কারখানা উন্নয়ন, আধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী বিনিয়োগের জন্য অনুদান (উইন্ডো-৩): মূলত সৃষ্টিশীল ও উদ্ভাবনী প্রকল্প যার ফলে ইতিবাচক সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব তৈরি হবার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে, সেক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন ও কারখানার উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে সর্বোচ্চ দুই লাখ ডলার পর্যন্ত ম্যাচিং গ্রান্ট ব সহায়তা দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে সহায়তা গ্রহণকারীকে ম্যাচিং গ্রান্টের বিপরীতে সহায়তা গ্রহণকারীর অবদান হতে হবে সর্বনিম্ন ৫০ শতাংশ।

উল্লেখ্য, এই বিনিয়োগ সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহীদের আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতিতে নির্বাচন করা হবে। এক্ষেত্রে যথাযথ মূল্যায়ন পদ্ধতি ও নিবিড় পর্যবেক্ষণ অনুসরণ করা হবে। আবেদনপত্র বিবেচনা ও বাছাইয়ের ক্ষেত্রে রপ্তানি বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির সক্ষমতার উপর গুরুত্ব দেয়া হবে ।

প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে চারটি উচ্চ রপ্তানি সম্ভাবনাময় শিল্প খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে রপ্তানি পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের প্রতিবন্ধকতাসমূহ নিরসনে সহায়তা করা। এর মাধ্যমে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্যও রপ্তানি আয়ে বড় ভূমিকা রাখবে এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করবে।