রবির ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ স্থগিত

বেসরকারি মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ব্যাংক হিসাব জব্দ রাখার নির্দেশ দেওয়ার একদিন পরই তা স্থগিত করেছে আদালত। সোমবার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে রবির ব্যাংক হিসাব বন্ধের আদেশ দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের  (এনবিআর)বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)।

মঙ্গলবার রবি আজিয়াটা লিমিটেডের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এ স্থগিতাদেশ দেয়।

প্রায় ১৯ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে রবির ব্যাংক হিসাব তিনদিনের (২৭ ফেব্রুয়ারি-১ মার্চ) জন্য ফ্রিজ (জব্দ) রাখতে দেশের সকল বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দেয়া হয়।

আদালত সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রবির এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও ইকবাল কবীর লিটনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানজিবুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মনিরুজ্জামান।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা নিশ্চিত করতে এ স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলটিইউ-মূসকের কমিশনার মো. মতিউর রহমান বলেন, রবি উচ্চ আদালতে রাজস্ব ফাঁকির বিষয়ে সঠিক তথ্য দেয়নি বলে আমি জেনেছি। তারা উচ্চ আদালতে ভুল তথ্য দিয়ে ব্যাংক জব্দের নির্দেশ স্থগিত করিয়েছেন।

এ বিষয়ে বিস্তারিত আগামীকাল জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ২৬ ধারা অনুযায়ী রবির রাজস্ব ফাঁকি উৎঘাটনে এলটিইউ রবির ট্রায়াল ব্যালেন্স, প্রতিষ্ঠানের ভাড়া, সিম বিক্রি, বিটিসিএল এর ইনভয়েস তথ্যাদি সংগ্রহ করে।

এসব তথ্যাদি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রবি আজিয়াটা লিমিটেড ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ মাসে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ২৬ হাজার ৯৫ টাকার অপরিশোধিত সম্পূরক শুল্ক, ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬১ টাকার স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার উপর অপরিশোধিত মূসক, ৮১ লাখ ৬ হাজার ২০২ টাকা ৬৫ পয়সা সিমের উপর কম প্রদর্শিত সম্পূরক শুল্ক ও মূসক এবং বিটিসিএলকে প্রদত্ত সেবার উপর প্রযোজ্য অপরিশোধিত মূসক বাবদ ৮১ লাখ ৭১ হাজার ৯৭৪ টাকাসহ মোট ১৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৮ হাজার ৩২ টাকা ৭০ পয়সার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। এ ফাঁকিকৃত রাজস্ব আদায়ে ব্যবস্থা নিতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব ৩ কার্যদিবসের জন্য জব্দ করা হয়েছিল।

এর আগেও রবির বিরুদ্ধে প্রায় ৯২৪ কোটি ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠে।

এ পাওনা আদায়ে চূড়ান্ত দাবিনামা জারি করেছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)-মূল্য সংযোজন কর শাখা।

এসব বকেয়া আদায়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি রবিকে পৃথক পাঁচটি চিঠি পাঠানো হয়। এলটিইউ-মূসকের কমিশনার মো. মতিউর রহমান সই করা চিঠিগুলো রবি আজিয়াটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়।

ওই সময় বলা হয়, মূসক আইন অনুযায়ী চূড়ান্ত দাবিনামা জারির পর ভ্যাট পরিশোধ না করলে পাওনা আদায়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হতে পারে।

আরএম/