রোহিঙ্গাদের সাময়িক আশ্রয় দেবে মালয়েশিয়া

প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাময়িকভাবে থাকতে দিতে রাজি হয়েছে মালয়েশিয়া। দেশটির মেরিটাইম এজেন্সির পরিচালক জুলকিফলি আবু বাকারের বরাত দিয়ে এমন কবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্স জানায়, নৌপথ দিয়ে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশকারীদের সাধারণত প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু মানবিকতার দিক বিবেচনায় তারা সাময়িকভাবে থাকার সুযোগ পাবে। বর্তমানে মালয়েশিয়ায় ১ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। জুলকিফলি আবু বাকার বলেন, পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বিশেষ অভিবাসন কেন্দ্রে থাকার সুযোগ পাবে। এসব কেন্দ্রে সাধারণত পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া মালয়েশিয়ায় আসা বিদেশিদের রাখা হয়।
মালয়েশিয়ায় জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) ৫৯ হাজার নিবন্ধিত শরণার্থী রয়েছে। কিন্তু অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যাটা এর দ্বিগুন। মালয়েশিয়া জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশনের অনুসিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করেনি। শরণার্থীদের এখানে অবৈধ অভিবাসী হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়।
মালয়েশিয়ার পাশাপাশি প্রতিবেশী থাইল্যান্ডও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে নিজেদের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড বর্ডারের কাছে জঙ্গল ক্যাম্পে বেশ কিছু গণকবরের খোঁজ পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে নিহতদের বেশিরভাগই মানবপাচারের শিকার রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর চলমান সঙ্কট সমাধানে ২০১৬ সালের আগস্টে গঠিত হয় অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে ওই কমিশন এক বছরের তদন্তের ৬৩ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চির কাছে জমা দেয় চলতি বছরের ২৪ আগস্ট। ২৫ আগস্টই এই ভয়াবহ গণহত্যা শুরু হয়।
মায়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর দমন-নিপীড়নে সবসময়ই সোচ্চার ছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। তিনি মায়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের উপর হামলা বন্ধের আহবানও জানিয়েছেন। তবে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর দমনপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সহিংসতার বেশির ভাগ খবরই অতিরঞ্জিত বলে মন্তব্য করেছে তারা। তা ছাড়া, রাখাইন রাজ্যে সংঘাত ওই রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে সরকার অভিহিত করেছে।
আজকের বাজার:সালি / ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭