রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: বাংলাদেশকে সমর্থন বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি থাইল্যান্ডের

রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের প্রতি নিজেদের সমর্থন বজায় রাখার কথা জানিয়েছে থাইল্যান্ড।

ঢাকায় নবনিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূত অরুনরোং ফোতং হামফ্রেস বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে এ বার্তা পৌঁছে দেন।

সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের জন্য ‘বিরাট বোঝা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘তারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং তাদের অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে।’

বর্তমানে বাংলাদেশে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাদের বেশির ভাগই মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর বর্বর অভিযান থেকে জীবন বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে নারাজ এবং তাদের ভাষায় সংখ্যালঘু এ জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরা বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী ‘বাঙালি’।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর দুটি প্রচেষ্টা ইতিমধ্যে ব্যর্থ হয়েছে।

হামফ্রেস বলেন, তিনি বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

‘দুদেশের মধ্যকার ৪০ বছরের এ সম্পর্ক খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ ও আন্তরিক,’ উল্লেখ করে তিনি জানান যে থাইল্যান্ড বাণিজ্য, শিল্প ও জ্বালানি খাতে বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে আগ্রহী।

তিনি বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বিশেষ করে জিডিপি প্রবৃদ্ধির ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনার কারণে।’

হামফ্রেস উল্লেখ করেন যে ব্যাংকক বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু চেয়ার চালু করা হয়েছে।

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় খুব কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পূর্ব থেকে যারা আসবে তাদের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দ্বার হলো বাংলাদেশ। এটি এখন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ।’

নতুন রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। তিনি দুদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা নিয়ে গভীর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

শেখ হাসিনার মতে, কৃষি খাত বিশেষ করে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে থাইল্যান্ড উন্নতি করেছে এবং তারা এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পারে।

‘আমাদের লক্ষ্য দারিদ্র্য দূরীকরণ ও মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা। জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল পরিকল্পিতভাবে দেশকে গড়ে তোলা,’ বলেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তার সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মূলে আছে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী। তিনি উল্লেখ করেন যে দারিদ্র্যের হার ২১.৪ শতাংশে নেমে এসেছে এবং মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে ১,৯০৯ মার্কিন ডলার।

তিনি রেল, সড়ক ও আকাশ পথে যোগাযোগের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আলাপকালে তিনি বলেন, সরকার সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে গুরুত্ব দেয় বলে জানান তিনি। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ