রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জার্মানীর প্রতি অর্থবহ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান মোমেনের

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গারা যেন তাদের জন্মভূমিতে নিরাপদে, সম্মানের সাথে ও টেকসই পরিবেশে ফিরে যেতে পারে, সে জন্য সেখানে একটি উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করার লক্ষ্যে অর্থবহ পদক্ষেপ গ্রহণে জার্মানীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জার্মানীর সফররত অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়নমন্ত্রী ড. গ্রেড মুলারের সাথে মঙ্গলবার রাতে পার্লামেন্টে এক বৈঠকে মোমেন এ আহ্বান জানান।

এ সময় জার্মান মন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান এবং মিয়ানমারকে সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)’র নির্দেশ সম্পূর্ণভাবে মেনে চলতে বাধ্য করার জন্য তার দেশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলে মন্তব্য করেন। বর্তমানে বাংলাদেশ ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে। এদের মিয়ানমার সরকার জোরপূর্বক ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করেছে। এ দেশে আশ্রিতদের অধিকাংশই মিয়ানমারের ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনা সদস্যদের নির্মম দমনপীড়ন শুরু হওয়ার পর সেখান থেকে প্রাণ রক্ষার্থে পালিয়ে এসেছে। বর্বরোচিত এই ঘটনাকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নির্মূলের প্রকৃষ্ট উদাহরণ’ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো ‘গণহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

বৈঠককালে, মোমেন বাংলাদেশের অসামান্য আর্থ সামাজিক উন্নয়ন বিশেষত এ দেশকে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ এর সাথে সঙ্গতি রেখে বিগত এক দশকের অভূতপূর্ব উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বছরব্যাপী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদ্যাপন সম্পর্কে অবগত করেন এবং এই উৎসবে অংশ গ্রহণের জন্য জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেলকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানান।

মোমেন জার্মান বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিশেষত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি আকর্ষণীয় ইনসেন্টিভ প্যাকেজ এবং সহজলভ্য দক্ষ জনশক্তি ও আইটি পেশাজীবীদের সুবিধা গ্রহণের পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান মধ্যম আয়ের ভোক্তাদের কথা মাথায় রেখে জার্মান বিনিয়োগকারীদের এদেশে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানান। তিনি বাংলাদেশে বিএমডব্লিউ এর মতো জার্মান বৃহৎ মোটরযান নির্মাতা কোম্পানিগুলোর অ্যাসামব্লিং কারখানা স্থাপনের পরামর্শ দেন। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে আজ বিকেলে জার্মান মন্ত্রী এবং তার প্রতিনিধিদলের ভারত যাবার কথা রয়েছে। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান