রৌশন আরার মরদেহ দেশে পৌঁছেছে

কঙ্গোতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক রৌশন আরার মরদেহ দেশে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছায় রৌশন আরার কফিন।

এরপর পুলিশের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে রৌশন আরার মরদেহ তার মহানগর প্রজেক্ট আবাসিক এলাকার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল আহসান জানান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আজ সকাল ১০টায় রাজধানীর মগবাজার নয়াটোলা জামে মসজিদে প্রথম জানাজা এবং দুপুর ১২টায় মগবাজার ওয়্যারলেস জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

বেলা ১ টা ৩০ মিনিটে (বাদ জোহর) রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের এসআই শিরু মিয়া মিলনায়তনে তার সর্বশেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবসহ পুলিশের সবস্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

জানাজা ও শ্রদ্ধা শেষে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে তাকে।

প্রসঙ্গত, পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টরের দায়িত্বে থাকা রৌশন আরা জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশ ফ্রন্ট পুলিশ ইউনিটের মেডাল প্যারেডে যোগ দিতে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে গিয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ৫ মে কঙ্গোর রাজধানী কিনশাশায় বাংলাদেশ ফ্রন্ট পুলিশের ইউনিট কমান্ডার (এসপি) ফারজানার গাড়িতে করে এক অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় তিনি দুর্ঘটনায় পড়েন। একটি লরির সঙ্গে ধাক্কা লেগে গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই মারা যান রৌশন আরা (৫৭)।

১৯৬২ সালের ১ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া রৌশন আরা মগবাজারের টিঅ্যান্ডটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।

এরপর তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে। ১৯৮৮ সালে মাস্টার্স করে শেষ করে তিনি যোগ দেন বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে।

তার স্বামী মো. শফিকুল আলম চৌধুরী একজন ব্যবসায়ী। তাদের একমাত্র মেয়ে মুনাহা চৌধুরী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ছেন।

রৌশন আরাই বাংলাদেশের পুলিশ বিভাগের প্রথম নারী অফিসার, যিনি বিভিন্ন জেলায় পুলিশ সুপারের (এসপি) দায়িত্বে পালন করেছেন। অতিরিক্ত আইজিপির পদে বাংলাদেশের দ্বিতীয় নারী অফিসার তিনি।

এছাড়া দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি পুলিশের হিসাবরক্ষণ বিভাগের সহকারী কমিশনার, রিজার্ভ অফিস, ট্রাফিক বিভাগ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রশিক্ষণ ইউনিটে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

কসোভোয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ক্রাইম অ্যানালাইসিস অফিসার, সুদানে আনমিস-আনপোল শান্তিরক্ষা মিশনের চিফ অব স্টাফ হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

রৌশন আরা দায়িত্ব পালনে কৃতিত্বের জন্য দুবার আইজিপি ব্যাজ পান এবং বাংলাদেশ সরকারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুলিশ পদক ‘পিপিএম’ অর্জন করেন।

আজকের বাজার/এমএইচ