লাইফ সাপোর্টে বারী সিদ্দিকী

জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ও নন্দিত বংশীবাদক বারী সিদ্দিকীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। এমনটাই নিশ্চিত করেছেন তার বড় ছেলে সাব্বির সিদ্দিকী।
সাব্বির জানান, গেল রাত (শুক্রবার) ১টার দিকে হার্ট অ্যাটাক করেন বারী সিদ্দিকী। আধাঘণ্টার মধ্যে অচেতন অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে লাইফ সাপোর্ট দেন।
সাব্বির সিদ্দিকী বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই আব্বার কিডনির সমস্যা। প্রায় দুই বছর ডায়ালাইসিস চলছিল। তবে গেল রাতে মেজর হার্ট অ্যাটাক করেন। এরপর তো ডাক্তাররা লাইফ সাপোর্টে নিয়ে যান তাকে। এখন আমাদের আসলে দোয়া আর অপেক্ষা করা ছাড়া কিছুই করার দেখছি না। সবাই উনার জন্য একটু দোয়া করবেন।’
এদিকে চিকিৎসকদের মতে, বারী সিদ্দিকীর দুটি কিডনি অকার্যকর।
বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী, গীতিকার ও বংশীবাদক বারী সিদ্দিকী। তিনি ১৯৫৪ সালের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলায় এক সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে পরিবারের কাছে গান শেখায় হাতেখড়ি হয়। মাত্র ১২ বছর বয়সেই নেত্রকোনার শিল্পী ওস্তাদ গোপাল দত্তের অধীনে তার আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। তিনি ওস্তাদ আমিনুর রহমান, দবির খান, পান্নালাল ঘোষ সহ অসংখ্য গুণী শিল্পীর সরাসরি সান্নিধ্য লাভ করেন। ওস্তাদ আমিনুর রহমান একটি কনসার্টের সময় বারী সিদ্দিকীকে অবলোকন করেন এবং তাকে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দেন। পরবর্তী ছয় বছর ধরে তিনি ওস্তাদ আমিনুর রহমানের অধীনে প্রশিক্ষণ নেন।
সত্তরের দশকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গে যুক্ত হন বারী। ওস্তাদ গোপাল দত্তের পরামর্শে ক্লাসিক্যাল মিউজিকের উপর পড়াশোনা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে বাঁশির প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন ও বাঁশির ওপর উচ্চাঙ্গসঙ্গীতে প্রশিক্ষণ নেন। নব্বইয়ের দশকে ভারতের পুনে গিয়ে পণ্ডিত ভিজি কার্নাডের কাছে তালিম নেন। দেশে ফিরে এসে লোকগীতির সাথে ক্লাসিক মিউজিকের সম্মিলনে গান গাওয়া শুরু করেন।
দীর্ঘদিন সংগীতের সঙ্গে জড়িত থাকলেও সবার কাছে বারী সিদ্দিকী কণ্ঠশিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান ১৯৯৯ সালে হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর। এই ছবিতে তার গাওয়া ছয়টি গানই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
আজকের বাজার: সালি / ১৮ নভেম্বর ২০১৭