লাকী আখান্দের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সুরকার, শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা লাকী আখান্দের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

 

১৯৫৬ সালের ৭ই জুন ঢাকায় জন্ম নেন বাংলা গানের কিংবদন্তি সুরকার শিল্পী লাকি আখন্দ।

৫ বছর বয়সেই তিনি তার বাবার কাছ থেকে সংগীত বিষয়ে হাতেখড়ি নেন। ১৯৬৩-১৯৬৭ সাল পর্যন্ত টেলিভিশন এবং রেডিওতে শিশুশিল্পী হিসেবে সংগীতবিষয়ক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে এইচএমভি পাকিস্তানে সুরকার হিসেবে তালিকাভুক্ত হন লাকী আখান্দ। সুরকার হিসেবে আরো কাজ করেন এইচএমভি ভারত এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রেও।

১৯৭১ সালে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। দেশ স্বাধীন করে আবারও বাংলা গান নিয়ে কাজ শুরু করেন। তার নিজের সুর করা গানের সংখ্যা দেড় হাজারেরও বেশি। এদিকে আশির দশকে লাকী আখান্দ সুরকার ও শিল্পী হিসেবে অর্জন করেন আকাশছোঁয়া খ্যাতি। ১৯৮৪ সালে সারগামের ব্যানারে লাকী আখান্দের প্রথম একক অ্যালবাম ‘লাকী আখান্দ’ প্রকাশ পায়। তিনি ব্যান্ড দল হ্যাপি টাচ্‌-এর সদস্য ছিলেন। পরে বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক (সংগীত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

লাকী আখান্দের উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘এই নীল মনিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’, ‘মামনিয়া, ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’, ‘কি করে বললে তুমি’ ‘লিখতে পারি না কোনও গান, ‘ভালোবেসে চলে যেও না’ প্রভৃতি। শিল্পীর সহোদর ভাই ক্ষণজন্মা হ্যাপী আখান্দের সঙ্গে ছিল তার আত্মার সম্পর্ক। ভাইয়ের মৃত্যুর পর দীর্ঘকাল তিনি নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন। অনেক পরে আবারও গানে ফেরেন তিনি।

গুণী এই সংগীতজ্ঞ দীর্ঘ সময় ধরেই মরণব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন। ছয় মাসের চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ২০১৬ সালের ২৫শে মার্চ দেশে ফেরেন। সেখানে কেমোথেরাপি নেয়ার পর শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছিল তার। একই বছরের জুনে আবারও থেরাপির জন্য ব্যাংকক যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে আর সেখানে যাওয়া হয়ে উঠেনি।

অবশেষে মৃত্যুবরণ করেন এ কিংবদন্তি শিল্পী-সুরকার। বাংলা গানের অমর এই শিল্পী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় গত বছরের ২১শে এপ্রিল মারা যান।

আজকের বাজার/আরজেড