লেপ তোষক বানানোর হিড়িক পড়েছে জয়পুরহাটে

দিনে কিছুটা গরম থাকলেও রাতে বেশ ঠান্ডা পড়ায় জয়পুরহাটের লেপ তোষক বানানোর কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপ-তোষক, বালিস, কোল বালিস ও জাজিম তৈরিতে। শীতের আগমনি বার্তায় প্রতিটি পরিবারে শীত মোকাবেলায় লেপ তোষকের চাহিদা বেড়ে যায়।

উত্তরাঞ্চলের ছোট জেলা জয়পুরহাট। শীত মৌসুমে এ অঞ্চলে তুলনামূলক শীতের প্রভাব বেশী থাকে। শীত মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে লেপ তোষক বানানোর কাজ শুরু হয় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকেই। জয়পুরহাট শহরের রেলপট্টিতে গড়ে ওঠা লেপ তোষক বানানোর পল্লীতে প্রায় ৪০ জন কারিগর রয়েছেন। যারা মালিকদের লেপ তোষক তৈরির অর্ডার অনুযায়ী কাজ করে থাকেন । জাজিম, লেপ ও তোষক তৈরির মজুরী হিসাবে তাদের ভাগ্যে জোটে ছোট-বড় অনুযায়ী প্রতিটি জাজিম ৪শ, লেপ বা তোষক হচ্ছে দেড় শ থেকে ২শ ৫০ টাকা করে। লেপ তোষক বানানোর কারিগর রমজান আলী, নাসির ও নাজমুল ইসলাম জানান, শীত মৌসুমে অতিরিক্ত আয়ের আশায় বুক বাঁধলেও সে আশা পূরণ হয়না। একেক জন প্রতিদিন গড়ে ৩/৪ টি লেপ বা তোষক তৈরি করে থাকেন। যা আয় হয় তা থেকে সংসারের খরচ এবং ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়। সব কারিগর মিলে কম পক্ষে শতাধিক লেপ-তোষক তৈরি করা সম্ভব হয় প্রতিদিন বলে জানান রবিউল ইসলাম ও রাসেল। কারিগররা জানান, সাইজ অনুযায়ী এবার লেপ তৈরিতে খরচ পড়ছে ৭শ ৫০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। ৫০ কেজি ওজনের একটি জাজিম ২ হাজার ৫শ টাকা থেকে ৩ হাজার পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

তোষক বানাতে খরচ পড়ছে ৭শ ৫০ থেকে ১২ শ টাকা পর্যন্ত। তুলার দামের উপর খরচ কম বেশি হয়ে থাকে বলে জানান, কারিগররা। মজুরী, তুলা সহ লেপ তোষক বানানোর কাজে ব্যবহৃত জিনিস পত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় লেপ তোষকের দাম গড়ে ১ শ থেকে ১৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান ঢাকা বেডিং হাউজের মালিক আবুল হোসেন। বর্তমান বাজারে গার্মেন্টস ঝুট দিয়ে তৈরি সিঙ্গেল তোষক ৩ শ ৫০ থেকে ৫০০ টাকা এবং ডবল তোষক ৮শ থেকে ২ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। জাজিম এক হাজার থেকে তিন হাজার, লেপ সিঙ্গেল ৫৫০ থেকে এক হাজার ও ডবল লেপ এক হাজার থেকে ২ হাজার পর্যন্ত খরচ পড়ছে। কাপড়ের দাম গজ প্রতি ৫/৬ টাকা বেড়ে যাওয়ায় এবার একটু খরচ বেশি পড়ছে বলেও জানান তিনি। শিমুল তুলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি, গার্মেন্টস ঝুট ২০ থেকে ৪০ টাকা, কার্পাস ১৮০ টাকা , উলের তুলা ৪০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। শীত ধীরে পড়ার কারণে লেপ-তোষক সেভাবে কেনা বেচা শুরু হয়নি বলে মন্তব্য করেন আবুল হোসেন।

সূত্র – বাসস