সকাল ৮টার আগেই করুন ৮ কাজ

ছবি : ইন্টারনেট

আমরা প্রতিনিয়ত ছুটে চলেছি সফলতার পেছনে। কিন্তু কিছু বিষয় মেনে চলতে পারলে সেই সোনার হরিণ সফলতা চলে আসবে খুব সহজে।এজন্য প্রথমে আমাদের সকালের সময়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করতে হবে। বলুন তো কতো দিন ভোরে ঘুম থেকে ওঠা হয় না।

সারা রাত জেগে কাজ করা আর দুপুর পর্যন্ত ঘুমানো আজকাল আমাদের ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এটা কোনো সুস্থ লাইফস্টাইল নয়। সফল এবং সুস্থ জীবনধারা চাবিকাঠি হতে পারে সকালের সময়টার সঠিক ব্যবহার।

আমরা কি জানি বিশ্বের নাম করা এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যারা প্রতিদিনের কাজ শুরু করেছেন, সেই ভোরে। এদের মধ্যে মার্গারেট থ্যাচার সকাল ৫ টায় উঠে যেতেন বিছানা থেকে।

সকালে আমাদের কর্মক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি থাকে। আর রাতে ভালো ঘুমের পর আমরা শারীরিক ও মানসিকভাবেও বেশ ফুরফুরে মেজাজে থাকি। তাই এই সময়ে যে কোনো জরুরি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে তা সঠিকভাবে নেওয়া সম্ভব। সফল হতে চাইলে সকাল ৮টার আগে যে আটটি কাজ করতে হবে:

১. ৫টায় ঘুম থেকে উঠুন:
প্রথমেই আপনি ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করুন। দিনের শুরুতে উঠতে পারলে পুরো দিন আপনি প্রয়োজনীয় কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবেন। তবে ভোরে উঠার সাথে সাথে এটাও মাথায় রাখবেন যেন আপনার ঘুম যেন পর্যাপ্ত হয়। কমপক্ষে ৭ ঘন্টা ঘুম কিন্তু জরুরি। সেই হিসেব করেই রাতে ঘুমাতে যাওয়াও উচিত।

২. প্রার্থনা সেরে ফেলুন:
ঘুম থেকে যেহেতু ভোর বেলাই উঠে পরবেন, তাই দিনের শুরুতেই প্রথমে প্রার্থনাটি সেরে ফেলুন। এতে আপনার ২টি কাজ হবে, ১মটি হচ্ছে আপনি ধর্মীয় দিক থেকে মনস্তাত্তিকভাবে নির্ভর থাকবেন আর ২য়টি হচ্ছে আপনার আতœবিশ্বাস বাড়বে।

৩. কিছুটা শারীরিক কসরত:
সারা রাত কর্মহীন থাকার পর ভোরে প্রয়োজন হবে শরীরে কিছুটা কর্মচাঞ্চল্য ফিরিয়ে নিয়ে আসা। এ জন্য দেখা যায় বেশির ভাগ মানুষ কিন্তু দিনের শুরুতে ব্যায়াম করেন। আর এটি স্বাস্থ্যের জন্যও খুব ভাল। এছাড়া আপনি কিছুটা হাঁটতে পারেন, করতে পারেন হালকা কিছু শারীরিক কসরতও। আর যারা নিয়মিত নামাজ পড়েন, তাদের জন্য তো ব্যাপারটা আরো সহজ হয়ে গেল।

৪. কমপক্ষে ৩০ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করুন:
দিনের শুরতে আপনি যখন খাদ্য গ্রহণ করবেন। তখন অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনি ওই খাবারের মাধ্যমে কমপক্ষে ৩০ গ্রাম প্রোটিন আহরণ করছেন কিনা। সে ক্ষেত্রে আপনার খাবারের তালিকায় থাকতে পারে দুধ ও ডিমের মত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।

৫. গোসল করে নিন:
দিনের শুরুতে যে কাজটি আপনাকে সারাদিন চাঙা রাখতে সাহায্য করবে সেটি হল গোসল। গোসল করলে দিনভর নিজেকে ঝরঝরে মনে হবে। কাজে গতি আসবে আর আপনি থাকবেন প্রাণবন্ত।

৬. কিছুটা পড়াশোনা:
অনেকেই বলতে পারেন এটা আবার কি ধরনের কথা? আমরা কি স্কুলের বাচ্চা যে সকাল সকাল পড়তে বসব। জ্বীৃজীবনে উন্নতি করতে চাইলে প্রতিনিয়ত পড়তে হবে। আর তা শুরু করতে হবে দিনের শুরু থেকে। এ সময় আপনি আপনার দিনের কর্ম পরিকল্পনাগুলোতে চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন। ঠিক করে নিতে পারেন পরবর্তী কর্ম পরিকল্পনা। আর নতুন কোন বিষয় সম্পর্কে জানার দরকার পড়লে সেটি সম্পর্কে জানার সবচেয়ে ভাল সময় কিন্তু এটি। কারণ এই সময় কিছু পড়লে তা মনে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

৭. দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা করুন আর তার অগ্রগতির মূল্যায়ন করুন:
জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছতে দীর্ঘ মেয়াদী একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করুন। আর দিনের শুরুতে সেই লক্ষ্যের অগ্রগতি মূল্যায়ন করুন। তাতে লক্ষ্যে পৌঁছানো অনেক সহজ হবে। আর লক্ষ্যটিও আপনার জীবন থেকে হারিয়ে যাবে না। দিনের শুরুতে বেশির ভাগ মানুষ এই কাজটি করেনা বলে তারা জীবনভর অনেক লক্ষ্য স্থির করে আর দিনের আলোর মতই তা দিনে দিনে মিইয়ে যায়।

৮. পর্যালোচনা করুন আপনার জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে:
উপরে যেমন আমরা বলেছি জীবনের একটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে সে মোতাবেক কাজ করতে এবং দিনের শুরুতে সেইসব লক্ষ্যের অগ্রগতির মূল্যায়ন করতে। ঠিক একইভাবে আমরা আপনাকে পরামর্শ দিব, দিনের শুরুতে সেই কাজের সাথে আরেকটি কাজকে যুক্ত করতে। সেটি হল গত হওয়া কাজের পর্যালোচনা করা। সেখানে কি ভুল ছিল তা বের করার চেষ্টা করুন এবং নতুন উদ্যমে সামনে এগিয়ে যান।

অনেকেই বলতে পারেন, সফল অনেক ব্যক্তি উপরের ৮টি কাজের সবগুলো তো করেননি। কিন্তু তারা সফল হয়েছেন। যারা এমনটি বলছেন তারা মোটেও ভুল বলেননি।

কিন্তু মনে রাখবেন, যারা ইতিমধ্যে সফল হয়ে গিয়েছেন তারা বৃত্তের বাইরে চলে গেছেন। আপনি কিন্তু বৃত্তের ভিতরেই আছেন। তাই সফলতা পেতে আপনাকে তো ছাড় দিলে চলবে না।

আজকের বাজার : আরএম/১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮