সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭

দেশের বরিশাল, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, যশোর ও পঞ্চগড়ে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শনিবার সাতজন নিহত হয়েছেন।

ব‌রিশাল নগ‌রীর কা‌শিপুর এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়ি ও অটোরিকশার সংঘর্ষে দুজন নিহত হ‌য়ে‌ছেন। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কাশিপুর বাজার সংলগ্ন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- কাশিপুর এলাকার বাসিন্দা মিজান জোমাদ্দারের ছেলে হাসেম (৪০) ও এয়ারপোর্ট থানাধীন এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রব হাওলাদারের স্ত্রী সালেহা বেগম (৫৫)।

এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ বিন আলম জানান, কাশিপুর বাজার সংলগ্ন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে একটি দ্রুতগতির ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে সালেহা বেগম ও হাসেম গুরুতর আহত হন।

পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে বরিশাল-শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।

দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও একজন। শনিবার গভীর রাতে বিরল উপজেলার চনকালী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো- বিরল উপজেলার রাজারামপুর ইউনিয়নের হাসিলা গ্রামের গয়নাথ রায়ের ছেলে সঞ্জিত রায় (১৫) এবং একই গ্রামের হরিদাস রায়ের ছেলে মিন্টু চন্দ্র রায় (১৭)।

বিরল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম গোলাম রসুল জানান, রাতে ওই তিন কিশোর একটি মোটরসাইকেল যোগে বিরলের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখছিল। চনকালী গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটি রাস্তার পাশের গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই সঞ্জিত ও মিন্টু মারা যায়।

গুরুতর আহত অবস্থায় সোহাগ রায় নামে আরেক মোটরসাইকেল আরোহীকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ১২ জন। শনিবার দুপুরে কালিগঞ্জ উপজেলা সদরের একটি পেট্রোল পাম্পের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত কাজী সাইদুর রহমান (৫৬) উপজেলার মৌতলা গ্রামের কাজী এমদাদ হোসেনের ছেলে।

কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হুসেন জানান, উপজেলা সদরের একটি পেট্রোল পাম্প থেকে তেল নিয়ে মোটরসাইকেল চালক সাইদুর রাস্তা পার হওয়ার সময় সাতক্ষীরাগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে গুরুতর আহত হন সাইদুর। তাকে দ্রুত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি আরও জানান, বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে বাসটি রাস্তার ধারে একটি গাছের সাথে ধাক্কা লাগে। এতে বাসে থাকা আরও কমপক্ষে ১২ যাত্রী আহত হন। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

যশোরের শার্শার নাভারন-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বাগআঁচড়া বাজারের ময়ুরী সিনেমা হলের সামনে শনিবার সকালে ট্রাক-মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে রাব্বী হোসেন (২০) নামে এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন।

নিহত রাব্বী শার্শা থানাধীন রাড়িপুকুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে।

নাভারণ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ টিটু মিয়া জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা থেকে ছেড়ে আসা যশোরগামী একটি ট্রাকের সাথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল চালক রাব্বী নিহত হন।

ট্রাক নিয়ে চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় বেপরোয়া গতির বাসের চাপায় রিশা আক্তার (৬) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। শনিবার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের সাতমেরা এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত রিশার বাড়ি ওই উপজেলার দেবনগর এলাকায়। সে ভজনপুর ইসলামী নূরানি কিন্ডার গার্টেনের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী। দুর্ঘটনায় শিশুটির বাবা রবিউল ইসলাম গুরুতর আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, কিন্ডার গার্টেন ছুটি হলে বাবার সাথে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিল রিশা। বাড়ির সামনে পৌঁছলে তেঁতুলিয়া থেকে পঞ্চগড়গামী আর ইসলাম এন্টারপ্রাইজের একটি যাত্রীবাহী বাস বেপরোয়া গতিতে তাদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের চাপায় ঘটনাস্থলেই মারা যায় রিশা। গুরুতর আহত রিশার বাবাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল ও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

এদিকে বাসটি দুর্ঘটনার পর কিছুদূর গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের নিচে পড়ে যায়। এসময় ওই বাসের ছয়জন যাত্রী আহত হন। আহতরা পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল্লাহ হেল বাকী জানান, ঘটনার পরই চালক পালিয়ে গেছে। তবে বাসটি আটক করা হয়েছে। নিহত শিশুকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ