সুন্দরবনের সকল খালে দুই মাস মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে বন বিভাগ

মৎস্য সম্পদ রক্ষায় আজ সোমবার থেকে সুন্দরবনের সব খালে দুই মাসের জন্য মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বন বিভাগ।
মাছের ভান্ডার হিসেবে খ্যাত এই ম্যানগ্রোভ বনের চারশতাধিক খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করাসহ মৎস্য এবং মৎস্য প্রজাতির অবাধ প্রজনন ও সংরক্ষণে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
একই সাথে ২৫ ফুট বা তার চেয়ে কম চওড়া খালগুলোতে সারাবছর ধরে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকবে বলেও সুন্দরবন বিভাগ নিশ্চিত করেছে।
বাগেরহাটে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান জানান, সুন্দরবন বিভাগের কাছ থেকে নিদৃষ্ট পরিমান রাজস্ব পাশ-পারমিট নিয়ে বৈধ ও অবৈধ পথে সুন্দরবনের মৎস্য এবং মৎস্য প্রজাতির সম্পদ আহরণ করতে জেলেরা বনে প্রবেশ করে থাকে। জুলাই ও আগস্ট মাসে সাদা মাছের প্রজনন মৌসুমে মাছের আধিক্য থাকায় একশ্রেনীর আসাধু জেলে সুন্দরবনের খালগুলোতে বিষ দিয়ে মাছ আহরণ করে।
তিনিবলেন, এই বিষ প্রয়োগের ফলে খালের ছোট-বড় সব মাছসহ মৎস্য প্রজাতির সকল প্রাণী মারা যায় এবং মৎস্য প্রজাতির অবাধ প্রজনন ও সংরক্ষণ বিনষ্টের পাশাপাশি সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এ অবস্থা থেকে উত্তরনের লক্ষ্যে চলতি ‘জুলাই-আগস্ট’ দুইমাস সুন্দরবনের সকল খালে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। একই সাথে ২৫ ফুট বা তার নিচের চওড়া সকল খালগুলোতে সারা বছর ধরে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকবে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনের জলভাগের পরিমান ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গ কিলোমিটার, যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১ দশমিক ১৫ ভাগ। এই জলভাগে জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ১৩টি বড় নদ-নদীসহ ৪৫০টি খাল।
জোয়ারের পানিতে সবসময় প্লাবিত হওয়া ম্যানগ্রোভ এই জলভাগে ভেটকী, রূপচাঁদা, দাঁতিনা, চিত্রা, পাংগাস, লইটা, ছুরি, মেদ, পাসে, পোয়া, তপসী, লাক্ষা, কৈ, মাগুর, কাইন মাগুর, রূপালী ইলিশসহ ২১০ প্রজাতির মাছ, গলদা, বাগদা, চাঁকা, চালী, চামীসহ ২৪ প্রজাতির চিংড়ি পাওয়া যায়।
এছাড়াও, বিশ^খ্যাত শিলা কাঁকড়াসহ ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া, ৪৩ প্রজাতির মালাস্কা ও একপ্রজাতির লবস্টার, লবন পানির কুমির, ভোদড় এবং বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ইরাবতী ডলফিনসহ ৬ প্রজাতির ডলফিন রয়েছে।