সৈয়দ আশরাফের মরদেহ দেশে আসবে শনিবার

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আর নেই। দীর্ঘদিন ফুসফুস ক্যান্সারে ভুগে বৃহস্পতিবার রাতে থাইল্যান্ডের এক হাসপাতালে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে টানা পঞ্চমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। এর আগে ওই আসন থেকে ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন তিনি।

গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সকল সাংসদ শপথ নিলেও তিনি শপথ নিতে পারেননি। শপথ গ্রহণের জন্য সময় আবেদন করে স্পিকারের কাছে চিঠি পাঠান বিদেশে চিকিৎসাধীন এই অসুস্থ নেতা।

আশরাফের ব্যক্তিগত সহকারী সচিব একেএম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শনিবার আওয়ামী লীগ নেতার মরদেহ দেশে আনা হবে।

দশম জাতীয় সংসদ সদস্য সৈয়দ আশরাফ থাইল্যান্ডে চিকিৎসা গ্রহণের জন্য গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৯০ দিনের ছুটি নিয়েছিলেন।

২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত সরকার আমলে দলের কঠিন সময়ে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন সৈয়দ আশরাফ। ২০০৯ সালে তাকে দলের সাধারণ সম্পাদক বানানো হয়। তিনি ২০১৬ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে ওই দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর আশরাফকে এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী বানানো হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মহাজোটের জয়লাভের পরেও তাকে একই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়।

তবে ২০১৫ সালের ৯ জুলাই তাকে ওই মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়। অবশ্য এর এক সপ্তাহ পরেই সৈয়দ আশরাফকে জনপ্রশাসন মন্ত্রী বানানো হয়।

পারিবারিক ঐতিহ্য হিসেবে ছাত্রাবস্থা থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফ। দেশের স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে ছাত্রলীগের বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ইউনিট সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহকারী প্রচার সম্পাদক ছিলেন তিনি।

অভিজ্ঞ এই নেতার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং তার মন্ত্রিসভার সহকর্মীসহ আওয়ামী লীগ নেতারা।

পৃথক বার্তায় তারা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন মহৎ-প্রাণ, সৎ, নীতিবান, দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হারালো। তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন ও গৌরবময় নেতৃত্ব চির অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।

১/১১ সময়কালে দলের কঠিন পরিস্থিতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য সৈয়দ আশরাফের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন শেখ হাসিনা। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ