স্থানীয়দের সঙ্গে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ২৫

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গোবরা গ্রামবাসীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে।

বুধবার (৪ জুলাই) শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) সকাল ১০টায় শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবিতে ক্যাম্পাসের জয় বাংলা চত্বরে মানবন্ধন করে। এক পর্যায়ে তারা পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে।

এসময় স্থানীয়রা দেশীয় অস্ত্রসহ শিক্ষর্থীদের ওপর হামলা চালায়। আত্মরক্ষার জন্য শিক্ষার্থীরাও পাল্টা হামলা চালায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ বাদে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশসহ প্রায় ২৫ জন আহত হয়।

এর আগে গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গোবরা গ্রামের ১৫/১৬ জন যুবক ফুটবল খেলা শেষে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস লেকে গোসল করতে আসে। তারা প্রায় অর্ধ উলঙ্গ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকে গোসল শুরু করে। তখন সেখানে ছাত্রীরা ছিলো। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ ছাত্রী এ ঘটনার প্রতিবাদ করে। পরে বহিরাগতরা ওই ২ ছাত্রীকে মারপিট করে।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যা ৭ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। শিক্ষার্থীরা বিশ্বদ্যিালয়ের সামনের বেলায়েত হোসেন মার্কেটের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা সোবহান সড়কের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে।

সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েক দফা থেমে থেমে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গাড়িতে ভাংচুর চালানো করে। পুড়িয়ে দেয় দুটি মটর সাইকেল। এক পর্যায়ে বিশ্বদ্যিালয়ের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে ভাংচুর ও শিক্ষার্থীদের মারপিট করে তারা। এতে শিক্ষার্থীসহ ৫০ জন আহত হয়।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে হামলার ঘটনায় ৫ দফা দাবি জানিয়েছে শিক্ষর্থীরা। তাদের দাবিগুো হলো-অনতিবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় আনা,এক বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পূর্ণ আবাসিক করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশ বক্স স্থাপন বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া স্থাপন করা।

শিক্ষার্থীরা জানায়, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীদের উপর মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে হামলা চালানো হয়।এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়ার মো নয়। দোষীদের গ্রেপ্তার করে তাদের আইনের আওতায় আনার বিষয়ে প্রশাসনকে দায়িত্ব নিতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর জয়নাব বিনতে হোসেন বলেন, গ্রামবাসীর সাথে আমাদের সমঝোতা হয়েছে তারা কথা দিয়েছে আর কোন সংঘর্ষে তারা জড়াবেনা। আর শিক্ষার্থীদের দাবী দাওয়া তারা পেশকরেছিল সেগুলো আমরা মেনে নিয়েছি আর তারাও হলে ফিরে গিয়েছে।

ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আশা করি আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবেনা।

গোপালগঞ্জসদর থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন পক্ষ মামলা দায়ের করেনি।

জেবিন/রাসেল