হকিংয়ের সতর্ক বার্তার পর মঙ্গলের টিকিট নিয়ে হুড়োহুড়ি

২০১৮ সালে মঙ্গল অভিযান শুরু করছে নাসা। সারা বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ এ অভিযানে শামিল হতে চলেছেন। বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং সম্প্রতি জানিয়েছেন, পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব আর বড়জোর ৬০০ বছর। তার পরেই আগুনের গোলায় পরিণত হবে এ পৃথিবী। নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে তাই মানুষের উচিত এখন থেকেই পৃথিবীর বাইরে বাসস্থানের সন্ধান করা। হকিংয়ের সতর্ক বার্তার পর ক’দিন যেতে না যেতেই ইতিমধ্যেই লালগ্রহের টিকিট নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে গেছে।
গোটা বিশ্ব থেকে প্রায় ২৪ লাখ ২৯ হাজার ৮০৭ জনের নাম পেয়েছে নাসা। এর মধ্যে প্রায় ১ লাখ ৩৯ হাজার ভারতীয় লালগ্রহের টিকিট কেটেছে। সবচেয়ে বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চিন, তারপরেই ভারত। বুকিং নেয়া শেষ হয়েছে। মঙ্গলের পুরো অভিযানটি মোট ৭২০ দিনের। আগামী বছরের ৫ মে যাত্রা শুরু করে ২৬ নভেম্বর মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছবে মহাকাশযান।
কিছুদিন আগে চীনের বেইজিংয়ে টেনসড ‘উই’ সামিটে এক ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত হয়ে স্টিফেন হকিং এ বার্তা দেন।
বক্তৃতায় হকিং বিনিয়োগকারীদের কাছাকাছি কোনো গ্রহে মানুষের জন্য নতুন বসতি স্থাপনের প্রচেষ্টায় যোগ দিতে আহ্বান করেন। তার মতে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটবর্তী আলফা সেনট্যারি গ্যালাক্সিই হতে পারে মানুষের পরবর্তী আবাস। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব ৪ দশমিক ৩ আলোকবর্ষ। বিজ্ঞানীদের ধারণা এই গ্যালাক্সি পৃথিবীর মতই জীবন ধারণের উপযোগী।
স্টিফেন হকিং আগামী দুই দশকে এই গ্যালাক্সিতে পৌছানোর কথা বলছেন। এজন্য এমন একটি মহাকাশযান উদ্ভাবনের কথা বলছেন, যেটি হবে বিমানের মতই। কিন্ত এ মহাকাশযান আলোকবর্ষের দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমন করবে আলোর গতিতে।
হকিংয়ের মতে, এমন মহাকাশযান কয়েক ঘণ্টায় মঙ্গলে পৌছুবে, প্লুটোকে অতিক্রম করবে কয়েক দিনে আর আলফা সেনট্যারিতে পৌছুবে ২০বছরে।
তিনি বলেন, এখনই গবেষণা শুরু করলে কোনো একটি প্রজন্ম হয়তো পৃথিবীর ধ্বংস এড়িয়ে গ্রহ পরিক্রমায় যাত্রা করতে পারবে।
সম্মেলনে নাসার অ্যামেস গবেষণা কেন্দ্রের সাবেক প্রধান বলেন, সবকিছু সঠিকভাবে করলে, এই শতকের মধ্যভাগে আমরা প্রাণধারনের উপযোগী অন্য গ্রহের প্রথম ছবি দেখতে পাবো’।
উল্লেখ্য, যারা মঙ্গলে যাওয়ার টিকিট কেটেছেন, তারা কিন্তু সশরীরে মঙ্গলে পৌঁছবেন না। তাদের নাম একটি সিলিকন ওয়েফার মাইক্রোচিপে থাকবে। ইলেকট্রুন বিমের মাধ্যমে নামগুলো ঢুকিয়ে সেই চিপটি মহাকাশযানের মাথায় একেবারে মাথায় জুড়ে দেয়া হবে। সেই নামসমেত মহাকাশযান মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করবে।
আজকের বাজার : সালি / ১৫ নভেম্বর ২০১৭