হাথরুকে নিয়ে বিসিবিতেও চাপা ক্ষোভ!হাথরুকে নিয়ে বিসিবিতেও চাপা ক্ষোভ!

আজকের বাজার প্রতিবেদনঅতিরিক্ত বাড়াবাড়ির কারণে দলের মধ্যে এখন খুবই অজনপ্রিয় নাম চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। শুধু তাই নয়, সিনিয়র খেলোয়াড়দের অনেকেই রীতিমত ক্ষুব্ধ কোচের উপর। জানা গেছে, খেলোয়াড়দের পাশাপাশি বিসিবির একটি উল্লেখযোগ্য অংশও কোচের উপর বিরক্ত। একের পর এক সিনিয়র খেলোয়াড়দের ছোট করায় হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে চাপা ক্ষোভও বিরাজ করছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে শেষ করে কোচ দেশে ফিরলে তারা প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপনের কাছে কোচের লাগাম টেনে ধরার পরামর্শ দিবেন বলে জানা গেছে।কোচের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েই বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির প্রধানের পদ ছাড়তে হয়েছিল নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে। কারণ সরাসরি কোচের পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। পাপন-দুর্জয়ের সেই ঠা-া সম্পর্ক এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। আগে কারো মুখ দেখাদেখি না থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে দুজনকে একই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। পাপনের সঙ্গে সম্পর্ক অনেকটা স্বাভাবিক হলেও হাথুরুসিংহকে এখনও এড়িয়ে চলেন দুর্জয়। কোচকে এত বেশি ক্ষমতা দেওয়ার পক্ষে কখনই ছিলেন না তিনি। দুর্জয় অনেকবারই কোচের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনেন।মুশফিকের সঙ্গে কোচের যে বিরোধ চলছে তাতে দুর্জয়ের অবস্থান স্পষ্ট। তার সহানুভূতি পাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। শুধু দুর্জয়ের নয়, বেশ কয়েককজন পরিচালকের অবস্থানও তাই। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষে কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসবেন নাজমুল হাসান পাপন। তার আগে পাপনের সঙ্গে কথা বলতে পারেন দুর্জয়রা। এদর পক্ষ থেকে কোচের লাগাম টেনে ধরবার জন্য চাপ দেওয়া হবে বিসিবি বসকে।পাপনের কাছে কোচের বিপক্ষে এর আগে বেশ কয়েকবার মুখ খুলেছিলেন সিনিয়র খেলোয়াড়রা। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। কোচকে কোনো কিছুই বলেননি তিনি। উল্টো হাথুরুসিংহের সব কর্মকা-েই সমর্থন যুগিয়েছেন। যতদূর জানা গেছে, এবার কোচের বিপক্ষে একাট্টা হয়ে কড়া নালিশ জানাতে পারেন সিনিয়র খেলোয়াড়রা। আর ক্রিকেটারদের এই উদ্যোগে সমর্থন আছে বিসিবির একাংশের।কোচ হয়েও দল নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব খাটিয়ে আসছেন হাথুরাসিংহে। টিম ম্যানেজমেন্টে তো আরো বেশি প্রতাপশালী তিনি। তার কথাতেই সব হয়। একাদশ, ব্যাটিং পজিশন। টস থেকে শুরু করে সব। কখন কাকে দিয়ে বল করা হবে এবং ফিল্ড প্লেসিংও হয়, তার ইশারায়। ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর কোচ বটে। তার ক্ষমতার উৎস বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। কোচের সব কর্মকা-েই সমর্থন দিয়ে থাকেন। সেই সুযোগে চন্ডিকা হাথুরাসিংহে হয়ে উঠেছেন স্বৈরাচার! সিনিয়র খেলোয়াড়, এমনকি অধিনায়কদেরও নাজেহাল করতে কুন্ঠাবোধ করেন না তিনি।গত এক দেড় বছর ধরে দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের কাছে খুবই অজনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন হাথুরুসিংহে। মাশরাফি, সাকিব, মুশফিক, তামিম, রিয়াদ, মুমিনুল, নাসির কারো সঙ্গে ভেতরে ভেতরে ভালো সম্পর্ক নেই কোচের।২০১৫ সালের বিশ্বকাপে টানা দুই সেঞ্চুরি করার পরও দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচে বাদ পড়েছিলেন রিয়াদ। মাশরাফির কারণে আবার দলে ফিরেছিলেন তিনি। চলতি বছর মার্চে শ্রীলঙ্কা থেকে রিয়াদকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কোচ। কিন্তু সেবারও বাধ সেধেছিলেন মাশরাফি।মাশরাফির মতো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নন মুশফিক। কোচের সব কথাই মেনে নেন তিনি। সেই সুযোগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে বাদ দেওয়া হয় রিয়াদকে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও রিয়াদকে চাননি কোচ। তাকে দলে নেওয়া হয় প্রধান নির্বাচকের পছন্দে। কাজেই রিয়াদ যে কোচের উপর খুশি নন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।মাশরাফি ও মুমিনুলের ব্যাপার তো সবার জানা। দলের অন্য দুই সিনিয়র ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের সঙ্গেও ভেতরে ভেতরে খারাপ সম্পর্ক কোচের। এক ইস্যুতে সাকিবকে শাস্তি দিতে চেয়েছিলেন হাথরুসিংহে। কিন্তু অন্য সবার বিরোধিতার কারণে পেরে উঠেননি কোচ। জানা গেছে, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে তামিমকে বাদ দেওয়ার পক্ষে কথা বলেছিলেন হাথুরুসিংহে। কিন্তু বোর্ড প্রেসিডেন্ট ও নির্বাচকরা রাজি না হওয়ায় তাতে সফল হননি তিনি। সেই কথা কানে গেছে তামিমের।দলের সব সিনিয়র ক্রিকেটারা কোচের উপর রুষ্ট। বিসিবির একাংশ মনে করে, যথেষ্ট হয়েছে। কোচকে এবার সাবধানী হতে হবে। দেখা যাক, কোন পথে হাটেন বিসিবি বস।