১৭ বাংলাদেশির মরদেহ আসছে সোমবার

নেপালের কাঠমান্ডুতে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ২৬ বাংলাদেশীর মধ্যে শনাক্ত হওয়া ১৭ বাংলাদেশির মরদেহ আগামি সোমবার সকাল ১১টায় আসবে ঢাকায়। বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে মরদেহগুলো আনা হবে।

আজ রোববার আরো ৪ জনের লাশ প্রাথমিকভাবে শনাক্ত হয়েছে। নেপালের ফরেনসিক বিভাগের কাছে নিহতদের স্বজনদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মরদেহগুলো শনাক্ত করা হয়। এছাড়া আঙুলের ছাপ মিলিয়ে বাকি ৫ বাংলাদেশীর মরদেহ শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।

বিমান দুর্ঘটনার পর পেরিয়ে গেছে ৭ দিন। এখনো নেপালে মর্গের সামনে স্বজন হারাদের অপেক্ষা। দুঃসহ এই অপেক্ষার যেন শেষ নেই। একজন নিহতের বাবা বলেন, চেহারা বিকৃত হলে তো চিনতে পারবো না, কিন্তু হাত-পায়ের গঠন দেখে চিনতে পারব। আরেকজন বলেন, আশা করা হচ্ছে মঙ্গলবার তারা আমাদের কাছে মরদেহ স্থানান্তর করা হবে।

দুর্ঘটনায় নিহত ৪৯ জনের মধ্যে ৩৭ জনের লাশ শনাক্ত করা গেছে। আগামি মঙ্গলবার বিমান দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রীদের লাশ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এরপরই স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

আহত ইয়াকুব আলীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ দিল্লী পাঠানোর কথা রয়েছে। বিমান দুর্ঘটনায় আহত ৫ বাংলাদেশী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন। আহতরা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শারীরিক সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসিরউদ্দিন বলেন, আমরা সকল রোগীকে দেখেছি। আজকে আরো দুজন আশার সম্ভাবনা আছে। তাদের জন্য প্রস্তুতি রেখেছি যেন তারা আসলে তাদের সেবা দেওয়া যায়। আমরা আশা করি তাদের রোগীর সেবায় কোনো অসুবিধা হবে না। এছাড়া এই সকল রোগীর চিকিৎসার খরচ বহন করছে হাসপাতাল। তাই তাদের চিকিৎসা সেবা নিয়ে কোন সমস্যা হবে না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক খান আবুল কালাম আজাদ বলেন, পুরো দেশবাসীকে বলতে চাই, যারা এখানে এসেছেন তাদের যতটুকু দরকার ছিল, ততটুকু যত্ন করে রোগীদের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন থেকে স্থিতিশীল অবস্থার দিকে নেওয়া হচ্ছে। আমরা আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে তারা সব কিছু কাটিয়ে উঠতে পারবে।

বিমান দুর্ঘটনার কারণ জানতে বাংলাদেশ এবং নেপাল যৌথভাবে তদন্ত করছে। ইউএস বাংলার বিধ্বস্ত হওয়া বিমানে কারিগরি কোনো ত্রুটি ছিলো না বলে জানিয়েছেন সিভিল এভিয়েশনের তদন্ত কমিটির প্রধান ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ।

রহমতউল্লাহ বলেন, যত পুরনোই হোক না কেন বিমান কোনোদিন পুরনো হয় না। যখনই মেরামত করা হয় তখন হয়ত কোনো যন্ত্রাংশ ফেলে দিতে হয়। এই বিমানের কোনো সমস্যা ছিল না। বিমানটি যাওয়ার সময় আমরা এতে কোনো সমস্যা পাইনি। কোনো পাইলটই সমস্যা নিয়ে যান না।

গত ১২ মার্চের ওই দুর্ঘটনায় বাংলাদেশী ২৬ যাত্রীসহ ৪৯ জন নিহত হয়।

আজকেরবাজার/এস