১ মাসের মধ্যে ফিটনেসহীন গাড়ি ও চালকদের তথ্য চেয়েছেন হাইকোর্ট

সারা দেশে নিবন্ধনধারী কিন্তু ফিটনেসবিহীন ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৯ গাড়ির মালিকের নাম-ঠিকানাসহ তালিকা এক মাসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে সারাদেশে থাকা লাইসেন্সধারী ফিটনেসহীন ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৯ গাড়ি ও লাইসেন্স নিয়ে নবায়ন না করা চালকের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তাও জানতে চেয়েছে আদালত।

আগামী ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে বিআরটিএ চেয়ারম্যান ও বিআরটিএ’র সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালককে এসব নির্দেশ পালন করতে হবে।

সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আর বিআরটিএ‘র পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মঈন ফিরোজী ও রাফিউল ইসলাম।

এ সময় আদালতের তলব আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএ’র সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক মাহবুব-ই-রাব্বানী আদালতে হাজির ছিলেন।

এর আগে, গত ২৭ মার্চ ঢাকাসহ সারাদেশে ফিটনেসবিহীন ও নিবন্ধনহীন যানবাহন এবং লাইসেন্সহীন চালকের তথ্য জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। বিআরটিএ চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শক, ঢাকার ট্রাফিক পুলিশের উত্তর ও দক্ষিণের ডিসি এবং বিআরটিএ’র সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক মাহবুব-ই-রাব্বানীকে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

একইসঙ্গে বিআরটিএ’র সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক মাহবুব-ই-রাব্বানীকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। পাশাপাশি কতগুলো গাড়ির নিবন্ধন ও চালকের লাইসেন্স নবায়নের জন্য জমা আছে, কেন যথাসময়ে নবায়ন করা হচ্ছে না-সে বিষয়েও তথ্য জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। যার ধারাবাহিকতায় তিনি আজ সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনসহ আদালতে ব্যাখ্যা দেন।

প্রসঙ্গত, ৭১ হাজার ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে গত ২৩ মার্চ একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত ২৭ মার্চ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এসব আদেশ দেন।

প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। এ সময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিনের বক্তব্য জানতে চান আদালত। এ ছাড়া আদালতে দায়িত্বরত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক মামলার বিষয়ে মতামত দেন।

পরে ফিটনেসবিহীন ও নিবন্ধনহীন যান চলাচল এবং লাইসেন্স ছাড়া যান চালানো রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার সম্বলিত সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদের চেতনা বাস্তবায়নে মোটরযান অধ্যাদেশ-১৯৮৩ সহ সংশ্লিষ্ট সব আইন কঠোরভাবে মেনে চলতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, পুলিশের আইজি, বিআরটিএ চেয়ারম্যানসহ ৭জনকে এসব রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

আজকের বাজার/এমএইচ