২০৩০ সালের মধ্যে ১০,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নওপাজেকো’র

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রায়ত্ত নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (নওপাজেকো)। প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে ১০৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে। খবর ইউএনবি’র।

প্রতিষ্ঠানের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন আমাদের লক্ষ্য দেশের নেতৃত্বশীল বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থায় পরিণত হওয়া।’

সর্বশেষ কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানটি গত ৭ সেপ্টেম্বর জার্মান ভিত্তিক বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিদ্যুৎ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি কোম্পানি- সিমেন্সের সাথে একটি যৌথ উন্নয়ন চুক্তি (জেডিএ) স্বাক্ষর করেছে, যাতে ২০২৪ সালের মধ্যে আমদানিকৃত এলএনজি-ভিত্তিক ৩,৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা যায়।

পরিকল্পনা অনুসারে, নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পটুয়াখালী জেলার পায়রাতে বিদ্যমান ১,৩২০ মেগাওয়াট কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে স্থাপন করা হবে।

সিমেন্সের সাথে চুক্তি অনুযায়ী, ২০২১ সালের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১,২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে ২,৪০০ মেগাওয়াট স্থাপন করা হবে।

নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএম খুরশীদ আলম বলেন, ‘নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাব।’

কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিকভাবে সিরাজগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্র, খুলনা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ভেড়ামারা ৪১০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো প্রকল্পগুলোর কাজ শুরু করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট সাধারণ সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হওয়ার পর ২০১২ সালের নভেম্বরে এটি জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে। পরবর্তীতে এটিকে ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেলে আপগ্রেড করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘১০ বছরের মধ্যে আমরা সিরাজগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র, খুলনা ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ভেড়ামারা ৪১০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছি।’

নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড বর্তমানে বেশ কিছু নতুন প্রকল্প যেমন- সিরাজগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র (৩য় ইউনিট), সিরাজগঞ্জ ৪০০ মেগাওয়াট (± ১০%) কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প (৪র্থ ইউনিট), পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প (জেভিএ), মধুমতি ১০০ মেগাওয়াট এইচএফও ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প, রূপসা এলএনজি ভিত্তিক ৮০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এবং সিরাজগঞ্জ ৭.৬ মেগাওয়াট ফটোভোল্টাইক সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের কাজ করছে।

কর্মকর্তারা বলেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের পর কোম্পানির মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩,৯২৮ মেগাওয়াট পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।

ভবিষ্যতে উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে, তারা বলেন, ৬,২৩৭.৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্ষমতা সম্পন্ন সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা চলছে।

কোম্পানির কর্মকর্তারা আরো জানান, নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড ২০২১ সালের মধ্যে ৭,০০০ মেগাওয়াট এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ১০,০০০ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করতে সক্ষম হবে।

আজকের বাজার/এমএইচ