৭০০০ বর্গ কি.মি এলাকায় ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ

আজকের বাজার প্রতিবেদন
স্বাভাবিক উৎপাদন বাড়াতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শুরু হচ্ছে ২২ দিনের ‘মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান’। এর আওতায়, ১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। এছাড়া সারা দেশেই ইলিশ বিক্রি ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ থাকবে।
আলোচ্য জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের পাশাপাশি, তাদের সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মৎস অধিদপ্তরের অর্থ ও পরিকল্পোনা বিভাগের উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আশ্বিন মাসের পূর্ণিমার সময়কে, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। নতুন চাদেঁর পূর্ণিমা শুরুর ৪ দিন আগে থেকে শুরু হয়ে ২২ দিন পর্যন্ত ডিম ছাড়ে মা ইলিশ। এ কারণেই এসময়ে ইলিশ ধরা, পরিবহণ ও সংরক্ষণসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
মৎস অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, ১৯৮৫ সালের মাছ রক্ষা ও সংরক্ষণ বিধি (প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন ফিস রুলস, ১৯৮৫) অনুযায়ী এ আদেশ অমান্য করলে, কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদ- বা ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দ- হবে।
তিনি জানান, নিষিদ্ধ সময়ে সারাদেশের ঘাট, মৎস্য আড়ৎ, হাট-বাজার, চেইনশপে ব্যাপক অভিযান চালানো হবে। মৎস্য বিভাগের সঙ্গে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ, নৌপুলিশ, র্যা ব, বিজিবি,জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করবে।
এদিকে ইলিশ ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ থাকায়, জেলেরা যেন কষ্টে না পড়ে সেজন্য, তাদের প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগও নিয়েছে সরকার।
আমিনুল ইসলাম বলেন, ইলিশ নিষিদ্ধের এসময়ে জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হবে।
তিনি জানান, নিবন্ধিত প্রতিটি জেলে পরিবারকে ৪০ কেজি করে চাল প্রাদান করা হবে। এছাড়া জেলে পরিবারের নারীদের জন্য, স্থানীয় একটি সমিতির মাধ্যমে সঞ্চয় প্রকল্প করা হয়েছে। যেখানে তাদের সঞ্চিত অর্থের সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে সহায়তা করা হয়। এ কার্যক্রম ইলিশ সমৃদ্ধ ১৯টি জেলাতে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

মৎস্য অধিদপ্তরের জাটকা সংরক্ষণ ও গবেষণা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এ.বি.এম. জাহিদ হাবিব বলেন, ইলিশের উৎপাদন আগামীতে আরও বাড়বে। সে অনুযায়ী সরকার কাজ করে যাচ্ছে। প্রতি বছর নদীতে ‘মা ইলিশ’সংরক্ষণ অভিযান চলছে। এ বছরও চলবে।
এ কার্যক্রমের আওতায়, ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত প্রায় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাসহ সারাদেশে প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করে, আদেশ জারি করা হবে বলে জানান জাহিদ হাবিব।
তিনি বলেন, ইলিশ সংরক্ষণ, বিচরণ ও উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে, ৪ বছর মেয়াদী যে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে. এর প্রধান কাজ হবে সাগর থেকে তুলে এনে পদ্মা-মেঘনাসহ এসব নদীগুলোতে ইলিশের বিচরণ বাড়ানো এবং চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ বাড়ানো।
ইলিশ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র অর্জনের ব্যাপারে জাটকা সংরক্ষণ ও গবেষণা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫ লাখ মেট্রিকটন ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল ৩ দশমিক ৯৪ লাখ মেট্রিকটন। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিকটন।