৯ পরিচালকসহ ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যানের পদত্যাগের হুমকি!

ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ দাবি করেছেন ব্যাংকটির বেশিরভাগ পরিচালকই তার পক্ষে রয়েছেন। এই অবস্থায় পদত্যাগে বাধ্য করা হলে ওই পরিচালকরাও পদত্যাগ করবেন বলে এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন তিনি।

২০ মে শনিবার নয় পরিচালকের একটি যুক্ত বিবৃতি সাংবাদিকদের হাতে দিয়ে আহসানুল বলেন, ব্যাংকটির ২১ জন পরিচালকের মধ্যে নয়জন বিবৃতিতে সই করেছেন। এছাড়াও তিন জন বিদেশে রয়েছেন, যারা এই বিবৃতিতে একমত পোষণ করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ১৩ মে পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সৈয়দ আহসানুল হকসহ অন্য পরিচালকদের পদত্যাগ করতে চাপ দেওয়ার বিষয়টি উত্থাপিত হয়। তারা এই হীন বিপজ্জনক ষড়যন্ত্রের নেপথ্য শক্তিকে বের করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নজরে আনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কোনো পরিচালককে হুমকির মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হলে বহু সম্মানিত পরিচালক একযোগে পদত্যাগ করবেন।

এ সময় আহসানুল বলেন, সংবাদ সম্মেলনে আরাস্তু খান ‘মিথ্যাচার’ করেছেন। আহসানুল আলম অভিযোগ করেন, ইসলামী ব্যাংকে জামায়াত সমর্থকদের শক্তি সংহত হচ্ছে এবং তাতে সরকারের অনানুষ্ঠানিক উদ্যোগটি ভেস্তে যেতে পারে।

এই নিয়ে তিনি সম্প্রতি তার ফেসবুকে লিখেন, অশুভ শক্তির ইশারায় আমার শত চেষ্টার পরেও ইসলামী ব্যাংকে রাষ্ট্র বিরোধী শক্তি পুনর্বাসিত হয়েছে এবং জাতির পিতার খুনীদের সাথে সংশ্লিষ্টরা ফিরে আসছেন নেতৃত্বে। আগামী বছর এই ব্যাংকটিকে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে ব্যবহার করার নীল নকশা সম্পাদন হচ্ছে।

একটি অনলাইন পোর্টালে তিনি আরও স্পষ্ট ও দৃঢ়ভাবে এ অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসলামী ব্যাংক আবারও স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে চলে গেছে। তবে চেয়ারম্যান আরাস্ত খান গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আহসানুল হকের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান যে কথা ফেসবুকে লিখেছেন তার কোনো ভিত্তি নেই। আরাস্তু খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ চাইলে নিজে থেকে পদত্যাগ করতে পারেন। তার থাকা বা পদত্যাগ নিয়ে ব্যাংকের ভেতর থেকে তার উপর কোনো চাপ নেই।

স্বাধীন পরিচালক হিসেবে যদি উনি (ভাইস চেয়ারম্যান) নিজে পদত্যাগ করেন সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার নেই। এটা আমার ব্যাপার না। তার থাকা বা পদত্যাগ নিয়ে ব্যাংকের ভেতর থেকে কোনো চাপ নেই।

আহসানুল আলম পারভেজের ফেসবুক স্ট্যাটাস সম্পর্কে তিনি বলেন, এই স্ট্যাটাস দেওয়ার পরে আমি তাকে ফোন করেছিলাম। আমি তাকে বলেছিলাম, আপনি একটু ওয়েট করতে পারতেন। আমি ৫ ঘন্টা পরে দেশে ফিরবো। পরে যখন তাকে বোর্ড মিটিংয়ে ডাকা হলো, তখন তিনি বলেছেন, তাকে পদত্যাগ করতে ফোর্স করা হচ্ছে। কে বলেছে, সেটা আমাকে বলেননি। এ বিষয়ে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়েছি।

আরস্তু খান বলেন, আমরা এখানে ভালো কিছু করতে এসেছি। সবাই কিন্তু অনেক সৎ। এমনকি তিনিও (ভাইস চেয়ারম্যান)। কিন্তু, আমি জানি না। তিনি কেন এগুলো করেছেন। সরকার, ব্যাংক, বোর্ড এবং এই ম্যানেজমেন্টের ভাবমূর্তি নষ্ট করার কোনো অধিকার তার নাই।

উল্লেখ, গত জানুয়ারিতে সাবেক অতিরিক্ত সচিব আরাস্তু খানকে চেয়ারম্যান, অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলমকে ভাইস চেয়ারম্যান করার পাশাপাশি ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদেও পরিবর্তন আসে।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ২০ মে ২০১৭