উইঘুর মুসলিম নিপীড়ন

চীনের ২৮ প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্তি করলো যুক্তরাষ্ট্র

28 Chinese companies on the US blacklist, rtvonline

চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশের অধিবাসী উইঘুর মুসলিমদের ওপর অমানবিক নির্যাতন ও নিপীড়নে জড়িত থাকার অভিযোগে দেশটির ২৮টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে কালোতালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো ওয়াশিংটনের অনুমতি ছাড়া কোনো মার্কিন পণ্য কিনতে পারবে না।

সোমবার মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

তাদের নথিতে কালো তালিকায় নেয়া এ প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলো ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নে জড়িত’ বলে দাবি করা হয়েছে।

এ সম্পর্কে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কালোতালিকাভুক্ত এই ২৮টি প্রতিষ্ঠান চীনের দমন অভিযান, নির্বিচারে আটক এবং উইঘুর, কাজাখসহ দেশটির অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নজরদারিতে জড়িত।

যুক্তরাষ্ট্রের নেয়া এই পদক্ষেপের বিপরীতে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি চীন।

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশই উইঘুর মুসলিম। এই প্রদেশটি তিব্বতের মত স্বশাসিত একটি অঞ্চল। সেখানে বিদেশি মিডিয়ার প্রবেশের ব্যাপারে কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে।

তবে বিগত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন সূত্রে খবর আসছে যে, সেখানে বসবাসরত উইঘুরসহ ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা ব্যাপক হারে আটকের শিকার হচ্ছে। চীনে হান চাইনিজরা সংখ্যাগুরু। তাদের তুলনায় মুসলিম উইঘুরদের সংখ্যা অতি নগন্য।

উইঘুরদের নিপীড়নের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের কালোতালিকায় স্থান পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জিনজিয়াং প্রদেশের জননিরাপত্তা ব্যুরোসহ মোট ২০টি সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে। হিকভিশন, দাহুয়া টেকনোলজি, মেগভিল টেকনোলজিসহ বাকি ৮টি প্রতিষ্ঠানের সবগুলোই ফেসিয়াল-রিকগনিশন প্রযুক্তিতে বিশ্বসেরা।

তবে চীনা প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এবারই প্রথম নয়। চলতি বছরের মে মাসে ওয়াশিংটন চীনা টেলিকম জায়ান্ট হুয়াওয়েকেও কালো তালিকাভুক্ত করেছিল।

জিনজিয়াংয়ের বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে বেইজিং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উইঘুরদের ওপর তীব্র নিপীড়ন চালাচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে। বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে প্রায় ১০ লাখ মুসলমানের ওপর বেইজিংয়ের নিপীড়ন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থাও।

তবে চীন শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে ওঠা এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তারা বলছে, আটক কেন্দ্র নয় ওই ‘স্বেচ্ছা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো’ করা হয়েছে উগ্রবাদ মোকাবেলায়।

গত জুলাইয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে ২০টিরও বেশি দেশ উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর চীনের নিপীড়নের সমালোচনা করে লেখা একটি যৌথ চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিল।

আজকের বাজার/এমএইচ