আগামী নির্বাচনে ‘শক্তিশালী বিএনপি’ চায় আ’লীগ

আগামী নির্বাচনে একটি শক্তিশালী বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী লড়াই করতে চাই চায় আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে সংবিধানের আলোকেই নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বুধবার সন্ধ্যায় এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগ নেতারা এসব কথা বলেছেন। ‘কৃষক হত্যা দিবস’ (১৫ মার্চ) উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক লীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সংগঠনটির সভাপতি মো. মোতাহার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ড. আবদুর রাজ্জাক, আওয়ামী লীগ নেতা খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, কৃষক লীগ নেতা শামছুল হক রেজা, খান আলতাফ হোসেন বুলু, ছবি বিশ্বাস, আশালতা বৈদ্য প্রমুখ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে কামরুল ইসলাম বলেছেন, ‘মওদুদ আহমদ বলছেন, খালেদা জিয়ার তিন বছর সাজা হলে এমনিতেই জামিন হয়ে যাবে। আর সাত বছর সাজা হলে অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে জামিন নিশ্চিত হবে। আমরা খালেদা জিয়াকে সাজা দিতে চাই না, এটা আদালতের ব্যাপার। কিন্তু মওদুদ আহমদ ধরে নিয়েছেন খালেদা জিয়ার সাজা হবে। কিন্তু আপিল বিভাগে এ রায় বহাল থাকলে কি করবেন, তা তিনি (মওদুদ) বলেননি।’

খাদ্যমন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘দ্বিধা-বিভক্তি হয়ে হলেও বিএনপি নির্বাচনে আসবে। আমরা শক্তিশালী একটি বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনে লড়াই করতে চাই। আমরা ভঙ্গুরকোনো বিএনপির সঙ্গে লড়াই করতে চাই না।’

খালেদা জিয়ার বিভিন্ন মামলা সম্পর্কে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে এক আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছিলেন, ‘ধরে নিলাম, মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হয়ে গেল, ভালো কথা। সাজা হয়েছে, আমরা আপিল ফাইল করব। আপিল হলো যে বিচার হয়েছে এর ধারাবাহিকতা। তখন আমরা তার জন্য জামিন নেব। বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হলেও নির্বাচনে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারবেন। শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতাই নয়, বরং তিনি দল এবং জোটের নেতৃত্ব দিতে পারবেন। উনি যদি সাজা প্রাপ্ত হয়ে যান তাহলে তিনি আগামী তিন বছর বা সাত বছর জেলখানায় থাকবেন, এটা হয় না। দেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আপিল ফাইল করার পরপরই আমরা জামিনের জন্য দরখাস্ত করব। এবং সাধারণত তিন বছর সাজা হলে এমনিতেই তো জামিন হয়। আর সাত বছর সাজা হলে অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে জামিন নিশ্চিত হবে। খালেদা জিয়া জেলখানা থেকে আবার মুক্ত হয়ে ফিরে আসবেন। এটাই হলো কথা। কিন্তু এটা নিয়ে নানা ধরনের জল্পনা-কল্পনা, কথা-বার্তা হচ্ছে।’

মওদুদ আহমেদের এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনেই বুধবার উল্লেখিত কথাগুলো বলেছেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপিকে ইঙ্গিত করে আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালের মতো বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায় । কিন্তু এবার তা করতে দেওয়া হবে না।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধানে স্পষ্ট লেখা আছে, সরকার তার রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য প্রশাসন নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবেন।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘২০১৪ সালে নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আমার বিশ্বাস, বিএনপি আর ভুল করবে না। আগামী নির্বাচনে অবশ্যই তারা আসবে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধূরী বলেছেন, ‘বিএনপির সমালোচনা করতে চাই না। তারা ২০০১ সালে যেভাবে ক্ষমতায় গেছে তা বলতে চাই না। তারা যদি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা বজায় রাখতো তাহলে দেশ পিছিয়ে যেত না। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে খাদ্য উদ্ধৃত করেছে। কৃষককে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।’

কৃষকদের সহযোগিতা কামান করে তিনি আরো বলেছেন, ‘আপনারা আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখেন। তাহলে আপনোরাও ভালো থাকবেন, দেশ এগিয়ে যাবে।’ ’

আলোচনা সভায় বক্তরা দাবি করেন, ১৯৯৫ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে সাত দিনের মধ্যে ১৮ জন কৃষিক পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায়।

 

সুত্র: দ্য রিপোর্ট