ঈদযাত্রায় সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ৩৩৯,আহত ১২৬৫

এবছর পবিত্র ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো যাত্রীদের বাড়ি ফেরা থেকে কর্মস্থলে পৌঁছানো পর্যন্ত সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে ২৭৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৯ জন নিহত এবং ১২৬৫ জন আহত হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০১৮তে এসব তথ্য তুলে ধরেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি গত চার বছর যাবত ঈদে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে হতাহতদের তথ্য অনুসন্ধানে কাজ করছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২৩ জুন দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় সারাদেশে ১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫২ জন নিহত এবং ১৫০ জন আহতের খবর সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হলে তা পরদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ঈদ যাত্রা শুরুর দিন ১১ জুন থেকে ঈদ শেষে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফেরা ২৩ জুন পর্যন্ত বিগত ১৩ দিনে ২৭৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৯ জন নিহত এবং ১২৬৫ জন আহত হয়েছেন।

এসব দুর্ঘটনার যানবাহন পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৮.৮৯ শতাংশ বাস, ১৬.৩৯ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ১২.২২ শতাংশ নছিমন-করিমন, ১৩.০৬ শতাংশ ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৬.৬৭ শতাংশ অটোরিকশা, ৮.৩৩ শতাংশ কার-মাইক্রো ও ১৫.২৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৯.১৬ শতাংশ অনান্য যানবাহন দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

মোট দুর্ঘটনার ৩৪.০২ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৩২.৭২ শতাংশ পথচারীকে গাড়ী চাপা দেয়ার ঘটনা, ১৩.২৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনা, ১.১০ শতাংশ চলন্ত গাড়ি থেকে পড়ে, ০.৭৩ শতাংশ চাকায় উড়না পেছিয়ে ও ১৮.২০ শতাংশ অনান্য অজ্ঞাত কারণে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, একই সময়ের মধ্যে নৌ-পথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত, ৫৫ জন নিখোঁজ ও ৯ জন আহত হয়েছেন। রেল পথে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩৫ জন, ট্রেনের ধাক্কায় ৪ জন ও ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে ২ জনসহ মোট ৪১ জন নিহত হয়েছেন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানায়, সংগঠনটির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর ঈদ কেন্দ্রীক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদ যাত্রায় সড়ক, রেল ও নৌ পথে দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানীর বিষয়টি গত চার বছর যাবত পর্যবেক্ষণ করে আসছে।

এবার ঈদের আগে যাত্রাপথে সকল তদারকি সংস্থার সক্রিয় অবস্থানের কারণে ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হলেও ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরার পথে তদারকি না থাকায় সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে বলেও জানান তিনি।

সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহন, বিরতিহীন বা বিশ্রামহীনভাবে যানবাহন চালানো, অদক্ষ চালক ও হেলপার দ্বারা যানবাহন চালানো, মহাসড়কে অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত রিকশা, নসিমন-করিমন ও মোটরসাইকেল অবাধে চলাচল, মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকা, বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো, সড়ক-মহাসড়কে ফুটপাত না থাকা ও সড়ক-মহাসড়কে বেহাল দশা এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

আজকের বাজার/এমএইচ

“>