কুমিল্লায় স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের স্বতঃস্ফূর্ততা বাড়ছে

রক্তগ্রহীতার প্রয়োজনে সারাবছর নিয়মিত রক্তদান ছাড়াও দেশে করোনা দুর্যোগময় সময়েও কুমিল্লার স্বতঃস্ফূর্তভাবে বারবার মানুষের পাশে মানবিক মমতা নিয়ে দাঁড়ান স্বেচ্ছায় রক্তদাতারা। তবে গতবছর করোনার শুরু থেকে তুলনামূলক কিছুটা কম থাকলেও বর্তমানে চিত্র বদলেছে। করোনা ভয়কে জয় করে এখন স্বতঃস্ফূর্ত হতে শুরু করেছেন রক্তদাতারা।
জানা গেছে, আগে কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চাহিদানুযায়ি রক্তের ঘাটতি ছিল। তবে সেটি এখন অনেকটাই কমে এসেছে। এখন চাহিদার অধিকাংশ রক্ত জোগান দিচ্ছে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনগুলো।
জেলার জাগ্রত মানবিকতা, দৃষ্টান্ত ফাউন্ডেশন, তরী, আলো ব্লাড ডোনেশন, রক্তের বন্ধন, রক্ত কমল ফাউন্ডেশন নামে বেশ কয়েকটি সংগঠন মূমূর্ষ রোগীদের জন্য রক্ত জোগাড়ে কাজ করছেন। জীবনের ভয়কে উপেক্ষা করে মহামরির মধ্যেও সংগঠনগুলো মানুষের বিপদে এগিয়ে এসেছে।
নগরীর মিশন হাসপাতালে এক প্রসূতি রোগীকে রক্ত দিতে আসা জাগ্রত মানবিকতার সদস্য সজিব বাসসকে বলেন, রক্ত দিতে পেরে আমি খুব খুশি। করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রক্ত দিয়েছি। এ মাধ্যমে আমি মানসিক শান্তি পাই।
কুমিল্লার মুন হাসপাতালে রক্ত দিতে এসেছিলেন স্বেচ্ছা রক্তদাতা কামরুল ইসলাম। তার রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ। তিনি এবারসহ রক্ত দান করেছেন ৪ বার। তিনি জানান, রক্ত দিতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আমি নিয়মিত রক্ত দান করি। করোনাকালেও আমি রক্তদান থেকে বিরত হইনি। আসলে মুমূর্ষু মানুষের জীবন বাঁচাতে রক্ত দানের তৃপ্তিই আলাদা।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদাতাদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে রক্তদানে উৎসাহিত করতে কাজ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মুমুর্ষ রোগীদের রক্তের প্রয়োজনে সবসময় তরুণেরা এগিয়ে আসছেন। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের উৎসাহিত করছে।
কুমিল্লায় স্বেচ্ছায় রক্তদাতা বিভিন্ন সংগঠনের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে ১ লাখ মানুষের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা হয়েছে। পরে ব্লাড লিংক অ্যাপে সে তথ্য দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে কোনো বিড়ম্বনা ছাড়াই সহজে রক্ত সংগ্রহ করতে পারছেন ভূক্তভোগীরা।