খেলাপী ঋণ ব্যাংকিং খাতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে

খেলাপী ঋণ ব্যাংকিং খাতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান। তিনি বলেন, অতিরিক্ত তারল্য ও খেলাপী ঋণ ব্যাংকিং খাতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম বিষয়ক এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিআইবিএমের গবেষণায় ২০১৬ সালের ঋণ ব্যবস্থাপনায় বেশ কিছু সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশেষ করে অতিরিক্ত তারল্য এবং খেলাপী ঋণের সমস্যা উঠে এসেছে। এ দুটি বিষয় এখন ব্যাংকিং খাতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক খাতের ঝুঁকি কমাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই মধ্যে গত এক বছরেই বেশ কিছু প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আবু হেনা জানান, ২০১৫ সালে যেখানে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। সেখানে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত এই হার ১০ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে।

ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক এবং অধ্যাপক ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জী। মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, বড় ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। কিন্তু ছোট এবং মাঝারি ধরণের প্রতিষ্ঠানে ঋণের পরিমাণ কমছে। এক্ষেত্রে শহরে ঋণের পরিমাণ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে গ্রামাঞ্চলে ঋণ প্রবাহের পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড.তৌফিক আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে বড় অঙ্কের ঋণ দেয়া হয়েছে। এর একটি অংশ আদায় করা কঠিন হয়ে পড়বে। কিন্তু ব্যাংকগুলো ছোট এবং মাঝারি ঋণগ্রহীতাদের দিকে কম নজর দিচ্ছে। অধিক তারল্য শোরবাজারে বিনিয়োগ হবে আত্মঘাতী।

তিনি বলেন, ব্যাংকের ঋণ ব্যবস্থাপনা আরও দক্ষতার সঙ্গে করতে হলে তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তুলতে হবে। এজন্য ব্যাংকগুলোকেই অর্থ ব্যয় করতে হবে।

বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক মো: ইয়াছিন আলী বলেন, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশী ব্যাংকে খেলাপী ঋণের হার ১ শতাংশের কম। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে এ হার ৪০ শতাংশের ওপরে। একই পরিবেশে কাজ করে এতো কম বেশি হবে কেন। এখানে কোন সমস্যা আছে।

বেনামী চিঠি এবং গণমাধ্যমের খবরের প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার না করে কোন অভিযোগ পেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অনুরোধ জানান সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ।

মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল আমীন বলেন, দুদকের গ্রেফতারের কারণে ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এটি এ খাতের জন্য শুভ নয়।