‘গত ১০ বছরে ইলিশের উৎপাদন ৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ফলে গত ১০ বছরে জাতীয় মাছ ইলিশের উৎপাদন ৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির বর্তমান এই ধারা অব্যাহত রাখাই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য ইলিশের মজুদ নিরূপণ ও সর্বোচ্চ সহনশীল আহরণ মাত্রা নিয়ে বিজ্ঞানীদের আরো নিবিড় গবেষণা পরিচালনা করতে হবে।
শনিবার বেলা ১১টায় চাঁদপুর শিল্পকলা একাডেমিতে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০১৯ উদযাপন উপলক্ষে ‘ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে অভয়াশ্রমের প্রভাব, মজুদ নিরূপণ ও জাটকা সংরক্ষণে গবেষণা অগ্রগতি পর্যালোচনা-’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের(বিএফআরআই) উদ্যোগে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় প্রধান বক্তা ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু।
জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের এবারের শ্লোগান হচ্ছে- ‘কোনো জাল ফেলবো না, জাটকা ইলিশ ধরবো না’। বিএফআরআই মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রইছউল আলম মন্ডল।
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সাইদ মো. রাশেদুল হক, জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান, নৌ পুলিশ সুপার মো. জমসের আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদ পারভেজ চৌধুরী প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান বক্তা বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইলিশের টেকসই উৎপাদন বৃদ্ধি নির্ভর করে এর প্রজনন সফলতা, জাটকা মাছ রক্ষা এবং মাছ আহরণের পরিমাণের উপর। ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির মূলে রয়েছে জাটকা সুরক্ষা। ইনস্টিটিউটের গবেষণালব্ধ ফলাফলের উপর ভিত্তি করে সরকার বিভিন্ন নদ-নদীর জাটকা প্রধান অঞ্চলে ৬টি ইলিশ অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে। একেকটি অভয়াশ্রম ইলিশ উৎপাদনের সূতিকাগার হিসেবে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, ইলিশের সর্বোচ্চ প্রজনন মৌসুমে আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার ৪ দিন আগে, পূর্ণিমার দিন এবং পূর্ণিমার ১৭ দিন পরে অর্থাৎ মোট ২২ দিন সারা দেশের সাগর, নদ-নদীতে প্রজননক্ষম ইলিশ ধরা, পরিবহন, সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে এসব অভয়াশ্রমগুলোতে আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময়ে যথোপযুক্তভাবে জাটকা নিধন প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে। এতে ইলিশ উৎপাদনে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
আশরাফ আলী খান খসরু কর্মশালায় জানান, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ইলিশের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ৫ লাখ ১৭ হাজার মে. টনে উন্নীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মৎস্য অধিদপ্তর সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে জাটকা সমৃদ্ধ ১৭টি জেলার ৮৫টি উপজেলায় জাটকা আহরণে বিরত ২ লাখ ৩৮ হাজারেরও অধিক সুফলভোগী জেলে পরিবারকে মাসিক ৪০ কেজি হারে ৪ মাসের জন্য মোট ৩৮ হাজার ১ শত ৮৮ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা প্রদান করছে। যা অতীতের কোন সরকার করেনি। জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ভিজিএফ প্রদানের ফলে তাদের অন্নের সংস্থান সুনিশ্চিত হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে জাটকা আহরণ থেকে বিরত থাকছে।
শিক্ষা মন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকার দেশের ইলিশসহ মৎস্য খাতের উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক। ইলিশ বিষয়ে নিবিড় গবেষণা অব্যাহত রাখার জন্য ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছর হতে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর আওতায় ইলিশ গবেষণা জোরদারকরণ শীর্ষক ১টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে।

সূত্র – বাসস