চট্টগ্রামে বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘর্ষে ৫ শ্রমিক নিহতের ঘটনায় মামলা ও তদন্ত কমিটি গঠন

: চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারায় নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে পাঁচ শ্রমিক নিহতের ঘটনায় আজ দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এছাড়া ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিউল কবির আজ একথা জানান।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে এক মামলায় আড়াই হাজার, অপর মামলায় ৭২ জনকে আসামি করা হয়। ঘটনাস্থলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’
জানা গেছে, পুলিশের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় দুই থেকে আড়াই হাজার জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় ২২ জনকে অভিযুক্ত করে আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে । ফারুক আহমেদ নামে এক কর্মকর্তা বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন।
১৭ এপ্রিল শনিবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেতন-ভাতা সংক্রান্ত বিক্ষোভ থেকে পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ৫ শ্রমিক নিহত হয়। এতে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান বলেন, ঘটনার পর সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এর আগে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তারকে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কবির আহম্মেদ, কলকারখানা অধিদফতর চট্টগ্রামের লেবার পরিদর্শক মাসুদ রানা, বিদ্যুৎ বিভাগ চট্টগ্রামের সহকারী প্রধান প্রকৌশলী অভিজিৎ কুরি। কমিটিকে আগামী ৩ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া অন্য দুই সদস্য পুলিশ সুপার নেছার আহমেদ ্এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কবির হোসেন। কমিটিকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে তিন লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে সহযোগিতা দেওয়া হবে বলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গ-ামারা ইউনিয়নের বড়ঘোনায় ‘১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র’ যৌথভাবে নির্মাণ করছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ ও চীনের একটি প্রতিষ্ঠান। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৭০ ভাগ মালিকানা এস আলম গ্রুপের বাকি ৩০ ভাগ মালিকানা চীনের একটি কোম্পানির। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করছে একটি চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।