চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে ভীত নয় বাংলাদেশ: ইয়াফেস ওসমান

প্রযুক্তির নানা উদ্ভাবনের ফলে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সার্বিক কার্যক্রম ডিজিটালাইজড হচ্ছে। এর ফলে চতুর্থ শিল্প আসন্ন। এই বিপ্লব মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশ ভীত নয় বরং বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।

শনিবার ৯ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের চতুর্থ দিন সকালে ‘আগামী দিনের দক্ষতা ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লব’ বিষয়ক এক সেমিনারে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, এক সময় তথ্য প্রযুক্তি মেলার আয়োজন করলে লোকসমাগম হত না। আর এখন আপনারাই দেখতে পাচ্ছেন মানুষের ভিড়। তার মানে কি আমরা পিছিয়ে গেছি? না আমার এগিয়ে যাচ্ছি। তবে আমাদের আরো জ্ঞানী ও বাস্তবমুখী শিক্ষা গ্রহণ করার প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।

এটুআই প্রোগ্রামের পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের কি নোট স্পিকার ছিলেন আইএলও বুর‌্যে ফর ইমপ্লয়েয়ার অ্যাকটিভিটিজের এর জি হি চ্যাং।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মূখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) আবুল কালাম আজাদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, এফবিসিআই’র মো. সাইফুল ইসলাম, বিজিএমইএ’এর সিদ্দিকুর রহমান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, বিএমইটি’র সেলিম রেজা, টেকনিক্যাল এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের এমডি আলমগীর, আইএলও সাউথ এশিয়া টেকনিক্যাল টিমের গামরিল এইচ বরদাদোসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এতে বক্তারা বলেন, বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন সেবা ডিজিটালাইজড হচ্ছে। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে যতটা শিল্প ও প্রযুক্তিতে উন্নয়ন ঘটেছে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো ততটা উন্নত হয়ে ওঠেনি। এছাড়াও প্রযুক্তির নানা উদ্ভাবনের ফলে শিল্প ক্ষেত্র খুব দ্রুত অটোমেশন ঘটছে। তবে এই অটোমেশনের কারণে আমাদের বাংলাদেশে অনেক বেকার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বক্তারা বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে সারা পৃথিবীব্যাপী শিল্প ক্ষেত্রে মানুষের প্রয়োজনীয়তা কমতে থাকবে। শিল্প কারখানাগুলো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে প্রযুক্তি ও যন্ত্র নির্ভর হয়ে পড়বে। আর এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশ। কারণ আমাদের জনসংখ্যা অত্যাধিক। কিন্তু মেশিন ও রোবটের আধিক্য বাড়লে অনেক লোক বেকার হবে।

আর এ অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে দক্ষ মানব শক্তি গড়ে তুলতে জানিয়ে বক্তারা বলেন, প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ জনবল উন্নয়নে ক্ষেত্রে নতুন নতুন ট্রেডে মনোনিবেশন করতে হবে। এবং ইন্ড্রাস্ট্রিয়ালের চাহিদা অনুযায়ি সিলেবাস তৈরি করে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করাতে হবে।

কি নোট স্পিকার জি হি চ্যাং তার প্রেজেন্টেশনে বলেন, শিল্প বিপ্লবের ফলে যেমন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে তেমন বিলুপ্ত হচ্ছে পুরাতন অনেক পেশা। আর আশিয়ানভূক্ত দেশ গুলোতে অটোমেশনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যার ফলে এসব দেশেবিপুল সংখ্যক মানুষ কর্মচ্যুত হচ্ছে।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে আগাম প্রস্তুতি না নিলে এর পরিস্থিতি অত্যান্ত ভয়াবহ হবে বলেও মন্তব্য করেন প্রযুক্তিগত উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিশ্বায়নকে আমরা ঠেকাতে পারবো না। কিন্তু প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ সবাই এখন অটোমেশন ও রোবট প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদেরও প্রযুক্তি রিলেটেড পড়াশোনা সহ টেকনিক্যাল বিষয়ে বেশি লেখাপড়া করতে হবে।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ৯ ডিসেম্বর ২০১৭